শ্বশুরের টাকা হাতাতে অপহরণের নাটক জামাইয়ের

ধৃত জামাই সিরাজ এবং বিষ্ণুপুরের দাগী দুষ্কৃতী সাকিল।

জামাই বেকার। অন্য দিকে, শ্বশুরের ভালই সম্পত্তি রয়েছে। শ্বশুরের এক ভাই আবার প্রোমোটার। টাকার অভাব নেই। তাই তিন বছরের সৎ ছেলেকে নিয়ে অপহরণের নাটক করে টাকা হাতানোর ছক কষেছিলেন জামাই। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন গুনধর জামাই। সঙ্গে তাঁর দুই সঙ্গী।
বুধবার সন্ধ্যায় নরেন্দ্রপুরের জয়কৃষ্ণপুর চিয়ারি এলাকার বাসিন্দা সিরাজ আলি ফোন করেন তাঁর স্ত্রীকে। ফোনে জানান, কিছু দুষ্কৃতী তাঁর তিন বছরের ছেলে-সহ তাঁকে অপহরণ করে আটকে রেখেছে। অপহরণকারীরা দু'লাখ টাকা মুক্তিপণ চাইছে।

মেয়ের কাছে সব শুনে সিরাজের শ্বশুর সামসুল আলি নরেন্দ্রপুর থানায় গোটা বিষয়টি জানান। পুলিশকে তিনি জানান, কয়েক মাস আগেই সিরাজের সঙ্গে তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়েছে। সিরাজের সঙ্গে যে শিশুটি রয়েছে সে তাঁর মেয়ের প্রথম পক্ষের ছেলে।

অপহরণের অভিযোগ পেয়েই নরেন্দ্রপুর এবং সোনারপুর থানার আধিকারিকরা একটি যৌথ দল গঠন করেন। সোনারপুর থানার আইসি পরেশ রায়ের নেতৃত্বে রাতেই অভিযানে নামে পুলিশ। প্রথমে অপহরণকারীরা জয়েনপুর বলে একটি জায়গায় টাকা নিয়ে আসতে বলে। সেখানে আগে মেয়েকে নিয়ে পৌঁছন সামসুল। পেছনে সাদা পোশাকে পুলিশ। সেখানে পৌঁছতেই অপহরণকারীরা টাকা নিয়ে নেপালগঞ্জে যেতে বলে। গভীর রাতে সেখানে পৌঁছনর পর আবার জায়গা পরিবর্তন করে পৈলানে যেতে বলে অপহরণকারীরা।

সেখানে পৌঁছনর পর সামসুল দেখেন, দুই যুবক অপেক্ষা করছে একটি বাইক নিয়ে। মোটর বাইকটি দেখেই তিনি চিনতে পারেন। সেটি সিরাজের বলে পুলিশকে জানান বিষয়টি। অন্য দিকে, পুলিশ এসেছে আঁচ পেয়ে আচমকা মোটরবাইকে স্টার্ট দিয়ে বিষ্ণুপুরের দিকে পালাতে যায় ওই দুই যুবক। পুলিশ ধাওয়া করে। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে পালাতে গিয়ে বাইক নিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে ওই দুই যুবক। তাদের পাকড়াও করে পুলিশ জানতে পারে এক জনের নাম সাকিল মণ্ডল, অন্য জন সাহিল আকন্দ। জেরায় ওই যুবক বলে, সিরাজ নিজেই তাদের ভাড়া করেছিল অপহরণের গল্প ফাঁদতে। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, "বিনিময়ে মুক্তিপণের টাকা থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা তাদের দেবে বলেছিল সিরাজ। ধৃতদের জেরা করেই পৈলান থেকেই হদিশ মেলে সিরাজ এবং তার সৎ ছেলের।" পুলিশ সিরাজ এবং সাহিলকে গ্রেফতার করেছে। অন্য অভিযুক্ত সাকিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।