অ্যাসিডে পুড়িয়ে লোপাট খাশোগ্গির দেহ, বিস্ফোরক দাবি এরদোগানের


খাশোগ্গি হত্যা নিয়ে ফের বিস্ফোরক তথ্য দিল তুরস্ক। শুক্রবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোগান দাবি করেছেন, ওয়াশিংটন পোস্টের বর্ষীয়ান সাংবাদিক জামাল খাশোগ্গি ইস্তানবুলে সৌদি কনসুলেটে ঢোকার কিছুক্ষণ পরেই তাঁকে জেরা করেছিলেন সৌদি থেকে আসা গোয়েন্দারা।

২ অক্টোবর কিছুক্ষণ কথা কাটাকাটির পর তাঁকে প্রথমে মারধর করা হয়। তারপর গলা টিপে হত্যা করা হয়। এর পরেই খাশোগ্গির শিরশ্ছেদ করা হয় সৌদির সরকারি নিয়ম মেনে। মুণ্ডচ্ছেদের পর সযত্নে খাশোগ্গির শরীরটাকে টুকরো টুকরো করে কাটা হয়। কিন্তু অত বড় ভারী শরীরের দেহাংশ রাতারাতি লোপাট করা সম্ভব নয় বুঝে তা নাইট্রিক অ্যাসিডে চোবানো হয়। দেহাংশ অ্যাসিডে কয়েক ঘণ্টা গলানোর পর তা নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয়। বেশ কিছু অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যা অ্যাসিডে গলেনি প্লাস্টিক কন্টেনারে রেখে অনেক দূরে কোনও ডাস্টবিনে ফেলার জন্য পাচার করে দেওয়া হয়।

এরদোগান জানিয়েছেন, সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক খাসোগিকে হত্যা করাটা ছিল সৌদি সরকারের পূর্ব পরিকল্পিত। এজন্যই খাশোগ্গিকে নিজেদের দূতাবাসে ডেকে আনা হয়েছিল। তিনি সরকারি সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়েছেন। সাংবাদিক হয়ে বাক স্বাধীনতার মূল্য চোকালেন। খাশোগ্গির মতো একজন নির্বিরোধী, নিরপেক্ষ, নিরীহ, ভদ্র মানুষকে বর্বরতার সঙ্গে হত্যা করা জঘন্য অপরাধ। সেই মানুষের মরদেহ লোপাট করাটা আরেকটি অপরাধ। তুরস্কের তদন্তকারী দল ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শিরশ্ছেদ করে অ্যাসিডে চুবিয়ে দেহ লোপাট করা হয়েছিল খাশোগ্গির। কিন্তু তাঁর দেহাংশ কবর দেওয়া বা তাঁর অন্ত্যেষ্টি হওয়াটা জরুরি।

তুর্কি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, দূতাবাসের বাগানের মাটি খুঁড়ে পরীক্ষা করে দেখেছেন, হত্যাকাণ্ডের চিহ্ন লোপাট করতে বাগানের মাটিতেই চাপা দেওয়া হয়েছে অ্যাসিড, রক্তমাখা কাপড় ও কাগজের টুকরো। তার নমুনা নিয়ে যাওয়া হয়েছে পরীক্ষাগারে। তুরস্ক সরকারের দাবি, সৌদি আরবের রাজপরিবার ও সরকারের নির্দেশেই সরকারি গোয়েন্দারা ঠান্ডা মাথায় খাশোগ্গিকে নির্মমভাবে হত্যা করেছেন। মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও জানিয়েছেন, খাশোগ্গিকে নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত (সৌদির বিরুদ্ধে অবরোধ, নিষেধাজ্ঞা) নেওয়ার আগে আরও কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে চায় আমেরিকা। সৌদি আরবের জড়িত থাকা নিয়ে অকাট্য ও পর্যাপ্ত প্রমাণ হাতে পেতে চায় ওয়াশিংটন।