পুজোয় মদ বিক্রিতে সর্বকালীন রেকর্ড রাজ্যের!


এ বার বাঙালির দুর্গাপুজো ভালোই কেটেছে। অন্তত রাজ্যের আবগারি দফতরের হিসেব তেমনই। পুজোর মাসে সরকার ১২৭৫ কোটি টাকার মদ বিক্রি করেছে। আবগারি দফতর তৈরি হওয়ার পর কোনও এক মাসে এত রাজস্ব নাকি আগে কখনও আসেনি। তাই খুশি সরকার।আর রাজ্যবাসী যে খুশি মনেই পুজোর সময় দেদার মদ খেয়েছে তাও মনে করছেন আবগারি কর্তারা।

তবে এখানেই শেষ নয়। মা দুর্গার ভক্তদের সঙ্গে এ বার মা কালীর ভক্তদের লড়াই শুরু হয়েছে! আবগারি কর্তাদের আশা, অক্টোবরে পুজোর মাসে এসেছে ১২৭৫ কোটি। নভেম্বরে আছে কালীপুজো, ভাইফোঁটা এবং ছট। ফলে মদের বাজার চড়াই থাকবে।

শুধু দেখার, মা দুর্গাকে হারিয়ে মা কালীর ভক্তরা নভেম্বর মাসে ১২৭৫ কোটির বেশি আবগারি রাজস্বের জোগান দিতে পারেন কি না। তাতে নবান্নের ভাঁড়ার উপচে পড়বে। মেলা, খেলা, উৎসবে কোনও ভাটার টান থাকবে না বলেই মত প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের।

আবগারি দফতর সূত্রের খবর,  মদের পাইকারি ব্যবসা সরকার হাতে নেওয়ার পর রাজস্ব বেড়েই চলেছে। পশ্চিমবঙ্গ বেভারেজ কর্পোরেশনকে অনেকেই তাই সরকারের লক্ষ্মীর ঝাঁপি বলতে শুরু করেছেন। কর্পোরেশন তৈরি হওয়ার পর মাসে গড়ে ৯০০ থেকে ৯৫০ কোটি টাকার মদ বিক্রি হচ্ছে। আবগারি কর্তাদের আশা ছিল, পুজোর মাসে রাজস্ব হাজার কোটি ছাড়াবে। কারণ, অক্টোবরে শুধু মাত্র দুর্গাপুজোই ছিল। অতীত অভিজ্ঞতায় আবগারি কর্তারা দেখেছেন, যে বছর একই মাসে দুর্গা এবং কালীপুজো হয়, সেই মাসে রেকর্ড মদ বিক্রি হয়ে থাকে। তবে কর্তাদের যাবতীয় হিসেব-নিকেশ বদলে দিয়ে এক মাসেই ১২৭৫ কোটির টাকা মদ বিক্রিতে রীতিমতো চমকে গিয়েছেন কর্তারা। এক কর্তার আক্ষেপ, ''পাঁচ দিন ব্যাঙ্ক বন্ধ না থাকলে হয়তো এ বার ১৫০০ কোটির মদ বিক্রি হয়ে যেত। অবশ্য যা হয়েছে তা সর্বকালীন রেকর্ড।''

কিন্তু পুজোয় বাঙালি কী খেয়েছে?
আবগারি দফতর জানাচ্ছে, রাজ্যে বরাবর দিশি মদের বিক্রিই বেশি হয়। সামগ্রিক মদ খাওয়ার বিচারে দিশি মদ এ বারও বেশি বিক্রি হয়েছে। কিন্তু গত বছরের অক্টোবরের তুলনায় বিলিতি মদের বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৫৭%। তুলনামূলক ভাবে দিশি মদের বিক্রির হার তেমন মারাত্মক নয়। যা থেকে বোঝা যাচ্ছে, আম মদপ্রেমীরা ক্রমেই বিলিতিতে মজছেন। তবে এ বার পুজোর মাসে বিয়ার বিক্রির হার বেশ কম। কেন? এক আবগারি কর্তার বক্তব্য,''বিয়ার ছেড়ে অনেকেই হুইস্কি-রাম খাচ্ছেন। তাই বিলিতির বিক্রি প্রচুর বে়ড়েছে। তা ছাড়া বিয়ারের দাম বাড়াও বিক্রি কমার  কারণ হতে পারে। এখন গরমও তেমন নেই।''

গরম থাকুক বা না থাকুক, নভেম্বরেও মদের বাজার চাঙ্গাই থাকবে বলে মত আবগারি দফতরের।