বাথরুমে পড়ে ৪০ মিনিট, দেখলই না কেউ! প্রসূতির মৃত্যুতে কাঠগড়ায় হাসপাতাল


একা একা হাসপাতালের শৌচালয়ে গিয়েছিলেন। সেখানেই পড়ে গিয়ে মৃত্যু হল এক প্রসূতির। শর্মিষ্ঠা বসু ভট্টাচার্য নামে ওই রোগীর মৃত্যুতে ফের কাঠগড়ায় সরকারি হাসপাতাল।

বুধবার রাতে হাসপাতালে কোনও নার্স বা আয়ার দেখা না পেয়ে একাই শৌচালয়ে গিয়েছিলেন হরিদেবপুরের বাসিন্দা শর্মিষ্ঠা। দু'দিন আগেই তিনি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। ওই অবস্থাতে তিনি একাই শৌচালয়ে যান। ফেরার পথে আচমকা পড়ে গিয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন শর্মিষ্ঠা। এ ভাবেই শৌচালয়ের মেঝেতে প্রায় ৪০ মিনিট পড়েছিলেন। ঘণ্টাখানেক পর তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত শর্মিষ্ঠাকে বাঁচানো যায়নি। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতার চিত্তরঞ্জন সেবা সদনে।

ওই মৃত্যুর ঘটনায় ভবানীপুর থানায় হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁর পরিবারের লোকজন। গাফিলতি আদৌ হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে হাসপাতালের তরফে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। বুধবার রাতে প্রসূতি বিভাগের ওই ওয়ার্ডে কারা ডিউটিতে ছিলেন, তা-ও দেখা হচ্ছে। রাতে প্রতিটি ওয়ার্ডেই নার্স, আয়া থেকে শুরু করে চিকিৎসকদের ডিউটি থাকে। কিন্তু ঘটনার সময় কারও দেখা পাওয়া গেল না কেন, সে বিষয়ে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটিজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

দু'দিন আগে অস্ত্রোপচার করে সন্তান হওয়ায় পেটের কাটা অংশে তখনও ক্ষত ছিল। পড়ে গিয়ে সেই ক্ষত অংশেই তিনি গুরুতর চোট পান। ওই অবস্থায় অনেক ক্ষণ পড়ে থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে গিয়েছিল বলে চিকিৎসকদের মত।

এই ধরনের গাফিলতির কথা প্রকাশ্যে আসায় বৃহস্পতিবার সকালে উত্তেজনা ছড়ায় চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে। পরিজনদের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালের বেহাল অবস্থা এই ঘটনায় স্পষ্ট। তাঁদের প্রশ্ন, রাতে কারও শৌচালয়ে যাওয়ার দরকার পড়তেই পারে। তা বলে কোনও নার্স বা আয়াকে পাওয়া যাবে না?