সম্পত্তি হাতিয়ে মৃত্যুর আগেই মায়ের শ্রাদ্ধ করল মেয়েরা


মাথাভাঙ্গাঃ সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়ে জীবিত মায়ের শ্রাদ্ধ করে তাঁকে মৃত প্রমাণ করার চেষ্টা করল মেয়ে। প্রায় সত্তর ছুঁই ছুঁই অশীতিপর বৃদ্ধার ঠিকানা এখন নদীর চর।

কোচবিহারের  মাথাভাঙ্গা পুরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন নারায়ণী দাস। একসময়ে প্রচুর সম্পত্তি ছিল নারায়ণী দেবীর। স্বামী সহ তিন মেয়ে কে নিয়ে ছিল সুখের সংসার। দুই মেয়ের বিয়ের পর স্বামী মারা যান। ছোট মেয়ে কে নিয়েই থাকতেন বৃদ্ধা। ছোট মেয়ের বিয়ে দেন বিহারে। এরপর মাথাভাঙ্গার সমস্ত বিষয় সম্পত্তি বিক্রি করে মা নারায়ণী দাস কে বিহারে নিজের কাছে নিয়ে চলে যায় তার ছোট মেয়ে। সেখানে গিয়েই দুর্ভাগ্য নেমে আসে নারায়নি দেবীর কপালে। বৃদ্ধাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় ছোট মেয়ে। জীবনধারণের জন্য সেখানে শুরু করেন পরিচারিকার কাজ। শুধু তাই নয়, বছর খানেক পর বৃদ্ধার ছোট মেয়ে আত্মীয় পরিজনদের জানায় তার মা মারা গিয়েছেন। সামাজিক মতে শ্রাদ্ধও হয়ে যায় নারায়ণীদেবীর।

এক বছর পর নারায়ণীদেবী ফিরে এসেছেন। 'মৃত' মায়ের ঠাঁই হয়নি মেজ মেয়ের বাড়িতেও। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, 'হঠাৎ একদিন দেখি বৃদ্ধা রাস্তায় বসে রয়েছেন। তাঁকে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। পরে জানতে পারলাম তিনি মেজ মেয়ের কাছে এসেছিলেন। সেই মেয়ে তাঁকে ঘরে জায়গা দেয়নি।' প্রতিবেশিরা জানান, বৃদ্ধার যা সম্পত্তি ছিল তা থাকলে উনি বাকি জীবন যথেষ্ট সচ্ছল ভাবে কাটাতে পারতেন। কারও ওপর নির্ভর করতে হত না। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, 'আমরা সবাই মিলে বৃদ্ধাকে শুতুঙ্গা নদীর চরে একটি ছোট ঝুপড়ি তৈরি করে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।' বর্তমানে এলাকার মানুষের দয়ায় কোনো ক্রমে বেঁচে রয়েছেন নারায়ণী দেবী। বয়সের ভারে শরীরে বাসা বেঁধেছে রোগ। প্রশাসনের কাছে এখন তাঁর আর্জি একটু থাকা খাওয়া আর চিকিৎসার ব্যবস্থা।