বছরের পর বছর শিকল বেঁধে ধর্ষণ, স্বাভাবিক হতে ১৫ বছর লাগল ওরাংওটাংয়ের!

মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে দেহব্যবসায় নামানো হয়েছিল তাকে। তার পর বছরের পর বছর কেটেছে পতিতালয়ে। ইচ্ছামতো তার উপর লালসা মিটিয়ে গিয়েছে মানুষ। সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা কাটিয়ে স্বাভাবিক হতে ১৫ বছর লেগে গেল এক ওরাংওটাংয়ের! ব্রিটেনের 'দ্য সান'-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে সম্প্রতি এমনই তথ্য উঠে এসেছে।

জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা ওই ওরাংওটাংয়ের নাম পনি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বোর্নিও দ্বীপের জঙ্গলে তার জন্ম। কিন্তু শিশু অবস্থাতেই মায়ের কোল থেকে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় কিছু দুর্বৃত্ত। পতিতালয়ে নিয়ে গিয়ে যৌনদাসীতে পরিণত করে। সেখানে তার গায়ের রোম কামিয়ে দেওয়া হত রোজ। পরানো হতো গয়নাগাটি। গায়ে ছড়িয়ে দেওয়া হত পারফিউম। তার পর পাশের তেলের কারখানা থেকে আসা শ্রমিকদের টাকার বিনিময়ে তার কুঁড়েঘরে ঢুকিয়ে দিত দালালরা। শিকলে বেঁধে রেখে ইচ্ছেমতো তার উপর নিজেদের যৌন লালসা মিটিয়ে যেত একের পর এক মানুষ। সেই অবস্থাতেই দিন কাটছিল তার। পরে এক সংস্থার চেষ্টায় রেহাই মেলে।

১৯৯৪ সালে বাপ-মা হারা ওরাংওটাংদের উদ্ধারে নামেন পেশায় শিক্ষিকা মিশেল ডেসিলেটস। বোর্নিওতে ওরাংওটাংদের শুশ্রূষার একটি সংস্থায় ছিলেন তিনি। সেখানে ২০০৩ সালে পনিকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সময় মারাত্মক অবস্থা ছিল পনির। রোজ রোম তুলে দেওয়ায় মশা-মাছি এবং পোকামাকড়ের কামড়ে তার শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছিল। শিকল বাঁধা অবস্থায় একের পর এক পাষণ্ডের লালসার শিকার হতে হতে মানুষের উপর আস্থা হারিয়েছিল সে। কোনও মানুষকে কাছে আসতে দেখলেই ভয়ে সিঁটিয়ে যেত।

তবে তাকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করতে হিমশিম খেতে হয়েছিল ৩৫ জনের সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীকে। প্রথমে তাদের এলাকায় ঢুকতেই দেয়নি গ্রামবাসীরা, যাতে সোনার ডিম পাড়া হাঁস হাতছাড়া না হয়ে যায়। তাদের সঙ্গে রীতিমতো সংঘর্ষেরপর পনিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। তার পর থেকে তার চিকিত্সা এবং শুশ্রূষা চলছিল। এত দিনে সে স্বাভাবিক হতে পেরেছে।

তবে পনিকে উদ্ধার করা গেলেও, তার মতো অসহায় জীবদের নিয়ে অনেক দেশেই দেহব্যবসা রমরমিয়ে চলছে। ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমেও দরাদরি চলে আজকাল। তাতে এক একটি জন্তুর দাম ওঠে প্রায় ৯ লক্ষ টাকা।