সরকারি স্কুলে রাখতেই হবে মমতার ছবি

জরুরি ভিত্তিতে ঝোলাতে হবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-ব্যানার। 

সরকারি স্কুলে জরুরি ভিত্তিতে ঝোলাতে হবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-ব্যানার! শিক্ষা দফতরের নতুন নির্দেশে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

রাজ্যের সবক'টি সরকারি ও সরকার অনুমোদিত স্কুলে সোমবার ইমেল করে একটি নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা দফতর। জানানো হয়েছে, নির্দেশটি 'ভেরি ভেরি ইম্পর্ট্যান্ট।' তাতে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের 'মেরিট-কাম-মিনস স্কলারশিপে'র প্রচারের জন্য স্কুলের সবচেয়ে 'প্রমিনেন্ট' জায়গায় মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত ব্যানার ঝোলাতে হবে।ওই ইমেলেই ব্যানারের সফ্‌ট কপি পাঠানো হয়েছে। স্কুলগুলি সেটি ছাপিয়ে নেবে।

ওই ব্যানারে বাঁদিকের অনেকখানি অংশ জুড়ে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি। সঙ্গে বিশ্ববাংলার লোগো। পাশে স্বামী বিবেকানন্দের ছবির উপরে 'পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণা'র কথা লেখা। নীচে রয়েছে এই বছরের বৃত্তির জন্য ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আবেদন করার নির্দেশ।

শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া অংশের পড়ুয়াদের সাহায্যের জন্য বিবেকানন্দের নামাঙ্কিত ওই বৃত্তি প্রদান বাম সরকারের আমলে, ২০০৬-'০৭ শিক্ষাবর্ষে শুরু হয়েছিল। বার্ষিক উপার্জন আড়াই লক্ষ টাকার কম, এমন পরিবারের কৃতী ছেলেমেয়েরা এর জন্য আবেদন করতে পারেন। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি থেকে শুরু করে গবেষক স্তর পর্যন্ত বৃত্তি দেওয়া হবে। বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, এর আগে এই বৃত্তির প্রচারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর ছবি-সহ এমন ব্যানার ব্যবহার করা হয়নি। এবারই প্রথম।

বাম প্রভাবিত 'নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতি'র (এবিটিএ) নেতা কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, ''চলচ্চিত্র উৎসব জুড়ে কেবল ওঁরই (মুখ্যমন্ত্রী) ছবি ছিল। এখন স্কুলে স্কুলে নিজের ছবি টাঙাতে বলছেন! এতদিন ধরে এই বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে, এমন কখনও হয়নি।'' 'মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি'র (এসটিইএ) নেতা বিশ্বজিৎ মিত্রের কথায়, ''স্কুল আত্মপ্রচারের জায়গা নয়, এই সহজ সত্য যদি শাসক বিস্মৃত হন, তা দুর্ভাগ্যজনক।'' প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ''একজন মুখ্যমন্ত্রী স্কুলে স্কুলে নিজের ছবি সম্বলিত ব্যানার পাঠাচ্ছেন! এ-ও সম্ভব!''

শিক্ষা দফতরের অবশ্য যুক্তি, বৃত্তির প্রচারের লক্ষ্যেই এমন পদক্ষেপ। এক আধিকারিকের কথায়, ''সব জায়গাতেই সরকারি প্রকল্পের ব্যানারে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া হয়। স্কুল বলে যে বিতর্ক হচ্ছে, তা অর্থহীন।''