বারাসত থেকে উদ্ধার ২০ কোটির ‘সাপের বিষ’


দু'টি কাচের জার ভর্তি সাপের বিষ-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করল ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরো এবং সিআইডির যৌথ তদন্তকারী দল।

সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরোর আধিকারিকরা খবর পান, বাংলাদেশ  সীমান্ত দিয়ে সাপের বিষ পাচার হয়ে ভারতে ঢুকেছে। কয়েক জন পাচারকারী সেই বিষ উত্তর ২৪ পরগণার বারাসতে নিয়ে আসবেন। সেখানেই ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের মধ্যে হাতবদল হবে ওই বিষের।

সেই খবর অনুযায়ী যৌথ তদন্তকারী দল রাতে বারাসতের ময়না এলাকায় হানা দেয় এবং তিন যুবককে গ্রেফতার করে। তদন্তকরীদের দাবি, তাঁদের কাছ থেকে দু'টি কাচের জারে সাপের বিষ পাওয়া গিয়েছে। সিআইডি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ধৃতরা হলেন গাইঘাটার অমিয় দাস, হরিণঘাটার দীপক রায় এবং অরুপ বিশ্বাস। তদন্তকারীদের দাবি, ইউরোপ থেকে চোরা পথে এই সাপের বিষ বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছয়। সেখান থেকে বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে সেই বিষ এ রাজ্যে নিয়ে আসা হয়। তাঁদের দাবি, চিনে ওষুধ তৈরির জন্য এই সাপের বিষের ব্যপক চাহিদা। আন্তর্জাতিক বাজারে সেই বিষের দাম প্রায় কুড়ি কোটি টাকা।

যদিও ওয়াউল্ড লাইফ ট্রাস্টের মতো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা যাঁরা বন্যপ্রাণ নিয়ে কাজ করেন, তাঁরা এই বিষের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা আন্তর্জাতিক বাজার সাপের বিষের দাম প্রসঙ্গে বলেন, চিনে প্রতি গ্রাম কেউটের বিষের দাম সাড়ে চার হাজার টাকা। সেখানে ইউরোপ, বিশেষ করে ফ্রান্সে যে বিষ তৈরি করা হয় তার দাম প্রতি গ্রাম প্রায় ১৫০ মার্কিন ডলার। যা চিনের বিষের থেকে অনেক বেশি দামি। চিনে যেখানে এই বিষের ব্যবহার এবং বেচা-কেনা আইনসিদ্ধ সে ক্ষেত্রে কেন চোরা বাজার থেকে বেশি দামে এই বিষ কিনবে চিন?

তদন্তকারীরা এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে পারেননি। সিআইডি আধিকারিকরা বলেন,"ওই বিষ ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে।" তাঁদের এক জন বলেন, ''বাজারে প্রচলিত ধারণা আছে, এই সাপের বিষ‌ে ভাল নেশা হয়। সে কারণে বেশ কিছু জায়গায় রেভ পার্টিতে সাপের বিষের কদর আছে।" তিনি আরও জানান, সাধারণ মাদককে সাপের বিষের মোড়কে বিক্রি করার চক্রও থাকতে পারে এর পেছনে। ফরেন্সিক রিপোর্টে বোঝা যাবে বাজেয়াপ্ত 'বিষ' আসলে কী।