এবার আকবরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুললেন মার্কিন সাংবাদিক


আকবরের বিরুদ্ধে সরাসরি ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন পল্লবী।

একের পর এক যৌন নিগ্রহের অভিযোগে পদ ছেড়েছেন। তবে তাতেও স্বস্তি পাচ্ছেন না এম জে আকবর। এ বার তাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি ধর্ষণের অভিযোগ আনলেন মার্কিন নিবাসী সাংবাদিক পল্লবী গগৈ। বর্তমানে আমেরিকার 'ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও'(এনপিআর)-তে কর্মরত তিনি। মার্কিন সংবাদপত্র 'দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট'-কে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সেখানে দু'দশক আগের ঘটনার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

মাত্র ২২ বছর বয়সে 'দ্য এশিয়ান এজ'-এ কাজ করতে ঢোকেন ওই সাংবাদিক। সেই সময় কাগজের সম্পাদক ছিলেন আকবর। পল্লবীর বক্তব্য, তারকাদের মতো প্রভাব প্রতিপত্তি ছিল তাঁর। উঠতি সাংবাদিকদের কাছে ভগবানের চেয়ে কম ছিলেন না। তিনিও সেই দলে সামিল ছিলেন।

আকবরের লেখার ধরন, ভাষার দখলের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। মন দিয়ে তাঁর কাছ থেকে কাজটা শিখে নিতে চেয়েছিলেন। তাই শত কটূক্তি শুনেও রা কাড়তেন না। মুখ বুজে পরিশ্রম করে যেতেন।তার ফলও মিলেছিল হাতে নাতে। কাজে যোগ দেওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই কাগজের উত্তর সম্পাদকীয় বিভাগের দায়িত্ব পেয়ে যান। কিন্তু তার পরই শুরু হয় দুর্ভোগ।

বাকি অভিযোগকারিণীদের দেখেই সাহস পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন পল্লবী।

পল্লবীর দাবি, একদিন আকবরের কেবিনে পাতা দেখাতে গিয়েছিলেন তিনি। নিভৃতে তাঁকে পেয়ে কাজের প্রশংসা করেন প্রাক্তন মন্ত্রী। তার পরই এগিয়ে আসেন চুমু খেতে। কোনওরকমে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। তবে চূড়ান্ত অপমানিত বোধ করলেও, কাজ ছাড়ার সাহস পাননি।

তার কয়েক মাস পর দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে। মুম্বইয়ে একটি পত্রিকার উদ্বোধন ছিল। তার লে আউট দেখার জন্য তাজ হোটেলে নিজের ঘরে পল্লবীকে ডেকে পাঠান আকবর। সেখানে ফের ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। চুমু খেতে যান। তাঁকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন পল্লবী। তাই নিয়ে দু'জনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। পল্লবীর গালে আঁচড় কেটে দেন আকবর। সে যাত্রায়ও পালিয়ে বাঁচেন তিনি।

তবে তৃতীয়বার নাকি আর নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি পল্লবী। জয়পুরের এক যুগলকে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া নিয়ে খবর করতে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেই সময় ফের তাঁকে হোটেলের ঘরে ডেকে পাঠান আকবর। খবরটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা দরকার বলে অজুহাত দেন। কিন্তু সেখানে পৌঁছতেই পল্লবীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। জামা কাপড় ছিঁড়ে দেন এবং ধর্ষণ করেন।

পল্লবীর দাবি, ''ওঁর সঙ্গে গায়ের জোরে পেরে উঠিনি। তাই শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয় আমাকে। গোটা ঘটনায় এত লজ্জিত বোধ করছিলাম যে পুলিশের কাছে যাওয়ার সাহস পাইনি। কাউকে বলিওনি। বাকিদের দেখে এতদিনে সাহস পেয়েছি। কিন্তু এখন কি আর কেউ আমার কথায় বিশ্বাস করবে? অবশ্য আমিও নিজেকেই দোষ দিই।কেন যে ওঁর হোটেলের ঘরে গিয়েছিলাম?''

যদিও একতরফা পল্লবীর বক্তব্যই তুলে ধরেছে 'দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট।' তবে নিজের আইনজীবী মারফত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এম জে আকবর। এখনও পর্যন্ত ২০ জনেরও বেশি প্রাক্তন মহিলা সহকর্মী আকবরের বিরুদ্ধে নিগ্রহের অভিযোগ তুলেছেন। যাঁর মধ্যে শুধুমাত্র প্রিয়া রমানির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন আকবর। তাঁকে বদনাম করতে ভুয়ো অভিযোগ আনা হয়েছে বলে দাবি করেছেন আদালতে।