ধর্ষণ মামলায় দ্রুত বিচার, তৈরি হচ্ছে ১০০০ বিশেষ আদালত


আদালতগুলিতে মামলার পাহাড়। আইনের গেরোয় কোনও কোনও মামলা পড়ে রয়েছে ১০ বছর, কোনও মামলা ঝুলে রয়েছে তারও বেশি সময় ধরে। স্বাভাবিকভাবেই সঠিক সময়ে সুবিচার পাচ্ছেন না বিচারপ্রার্থীরা। ধর্ষণ বা নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রে এমনিতেই অভিযোগ প্রকাশ্যে আনতে ভয় পান নির্যাতিতারা, তার উপরে বছরের পর বছর আদালতের গোলকধাঁধায় পড়ে অনেকেই আইনের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলছেন। ফলে শাস্তি পাচ্ছে না অপরাধীরা।এবার এই সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নিচ্ছে কেন্দ্র। ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, শিশু ও নারীদের উপর অত্যাচার সংক্রান্ত মামলাগুলির দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য দেশজুড়ে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট তৈরির সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রক।

গত জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রক দেশজুড়ে এক হাজারটি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছিল। নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রককে পাঠানো প্রস্তাবে বলা হয়েছিল এই আদালতগুলিতে শুধু নারী নির্যাতন এবং পকসো আইনে রুজু হওয়া মামলাগুলির বিচার হবে। আইনমন্ত্রকের সেই প্রস্তাবে সাড়া দিল নারী ও শিশুকল্যাণন্ত্রকের তৈরি বিশেষ কমিটি। কমিটির তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গোটা দেশে মোট ১ হাজার ২৩ টি এই ধরনের ফাস্ট ট্র্যাক আদালত তৈরি করা হবে। এই আদালতগুলিতে নারী ও শিশুদের উপর অত্যাচার সংক্রান্ত মামলার শুনানি হবে। এই প্রকল্পের ব্যয় ধার্য করা হয়েছে প্রায় ৭৬৭ কোটি টাকা। প্রাথমিকভাবে ৯টি রাজ্যে মোট ৭৭৭টি ফাস্ট ট্র্যাক আদালত স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। পরবর্তীকালে ২৪৬টি আদালত তৈরি হবে অন্য রাজ্যগুলিতে। প্রকল্পের খরচ বহন করা হবে নির্ভয়া ফান্ড থেকে। নির্ভয়া কাণ্ডের পর ২০১৩ সালে এই তহবিলটি তৈরি করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।

বর্তমান ভারতের সবচেয়ে জ্বলন্ত সমস্যা নারী নিরাপত্তা। বিরোধীরা তো বটেই এমনকী বিদেশি এজেন্সিগুলিও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে সরকারের ভূমিকা নিয়ে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক রিপোর্টে দেখানো হয়েছে মেয়েদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ ভারতবর্ষ। এমনকি আরব দেশগুলিও ভারতের চেয়ে মেয়েদের জন্য সুরক্ষিত। বলা বাহুল্য, এই রিপোর্টে আন্তর্জাতিক মহলে বেশ কলুষিত হয়েছে দেশের ভাবমূর্তি। তাই এবার আসরে নেমে পড়ল কেন্দ্র।