সবরীমালায় ঢুকতে কেন এত আগ্রহী মহিলা সমাজকর্মীরা? তসলিমার মন্তব্যে বিতর্ক!


সবরীমালা ইস্যুতে এমনিতেই উত্তাল গোটা দক্ষিণ ভারত। আর সেই আগুনেই যেন আরও খানিকটা ঘি ঢেলে দিলেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। এত বিতর্কের মধ্যেই লেখিকার বক্তব্য, মহিলা সমাজকর্মীরা কেন যে সবরীমালা ঢোকার জন্য এমন উঠে পড়ে লেগেছেন, তা তিনি বুঝে উঠতে পারছেন না।

গত ১৮ অক্টোবর ঐতিহাসিক রায়ে আয়াপ্পার মন্দিরে সব বয়সি মহিলাদের প্রবেশাধিকার দেয় সর্বোচ্চ আদালত। এর আগে ১০ থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত বয়সি মহিলারা সবরীমালা মন্দিরে ঢুকতে পারতেন না৷ একশো বছর ধরে এটাই ছিল মন্দিরের রীতি৷ কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, এই নিয়ম অনেকটা অস্পৃশ্যতার মতো। কোনও নিষেধাজ্ঞাকে কখনওই ধর্মীয় রীতি হিসেবে চালিয়ে দেওয়া যেতে পারে না।

সবরীমালা ইস্যু এখন কেরলের সিপিএম সরকারের কাছে শাঁখের করাতের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুপ্রিম নির্দেশ অমান্য করা যাবে না। আবার রায় কার্যকর করতে গেলেও পড়তে হচ্ছে নজিরবিহীন বিরোধিতার মুখে। পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে সর্বদল বৈঠকও ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। কিন্তু তাতেও কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। এদিকে শুক্রবার সমাজকর্মীদের প্রবেশের দাবিতে ফের উত্তাল হয় সবরীমালা। সমাজকর্মী ত্রুপ্তি দেশাই ও তাঁর ছয় সঙ্গীকে রুখতে বিমানবন্দরের সামনেই জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে হাজার হাজার ভক্ত। শেষমেশ আর ভিতরে ঢোকা হয়নি তাঁদের।

এমন পরিস্থিতিতেই টুইটারে মন্তব্য করে বিতর্ক উসকে দিলেন তসলিমা। মহিলা সমাজকর্মীদের এহেন পদক্ষেপকে রীতিমতো প্রশ্নের মুখে ফেলে দিলেন তিনি। এদিন তিনি টুইটারে লেখেন, "বুঝতে পারছি না মহিলা সমাজকর্মীরা সবরীমালায় প্রবেশের জন্য এত কেন আগ্রহী। তাদের বরং সেই সব গ্রামে যাওয়া দরকার যেখানকার মহিলারা শ্লীলতাহানি, ধর্ষণের শিকার। যেখানকার মেয়েদের শিক্ষা বা চিকিৎসার কোনও সুবন্দোবস্ত নেই। যেখানে স্বাধীনভাবে মহিলারা চাকরি করতে পারে না। কিংবা করলেও সমান অর্থ রোজগারের সুযোগ পায় না।" তাঁর এমন মন্তব্যে ইতিমধ্যেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, তসলিমার মতো লেখিকা যিনি নারীদের অধিকার নিজেই চিরকাল সুর চড়িয়েছেন, তাঁর কাছ থেকে এমন মন্তব্য কাম্য নয়। অনেকে আবার মনে করছেন তাঁর মন্তব্যে পাল্লা ভারী হয়ে গেল বিক্ষোভকারীদেরই।