কন্যা সন্তান হওয়ায় গৃহবধূকে পুড়িয়ে খুন, রায়নায় চাঞ্চল্য


বর্ধমান: কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ায় বধূকে দিনের পর দিন অত্যাচার করা হত। শেষপর্যন্ত বধূর গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। মৃত গৃহবধূর নাম পূজা দাস(২৩)। গত মঙ্গলবার ওই গৃহবধূকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হলে সোমবার সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের রায়নার শ্যামসুন্দরে।

গত মঙ্গলবার সকালে অগ্নিদগ্ধ মেয়েকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করেন বাবা গুরুপদ দাস। পরের দিন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে মেয়েকে পুড়িয়ে মারার অভিয়োগ দায়ের করেন থানায়। এরপরই তদন্তে নেমে মৃতের স্বামী সুমন, শ্বশুর সুকুমার ও শাশুড়ি জয়ন্তী দাসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরের দিন গ্রেপ্তার হয় পূজা দাসের জা সারথি দাস। এই ঘটনার এক সপ্তাহ পরে বর্ধমান হাসপাতালে ওই বধূর মৃত্যু হয় এদিন। তারপরই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।

পুলিশ জানিয়েছে, বধূকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে ধৃত চারজনই বর্তমানে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছে। এবার গৃহবধূর মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে এসেছে। তাই ধৃতদের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া মামলার সঙ্গে খুনের ধারা যোগ করা হবে। গুরুপদবাবু জানান, বছর সাতেক আগে পেশায় রাজমিস্ত্রি সুমনের সঙ্গে তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়।আড়াই বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে তাঁদের। বিয়ের বছর দুই পর্যন্ত সংসারে কোনও অশান্তি ছিল না। কিন্তু এরপর থেকে মেয়ের উপরে নির্যাতন শুরু হয়। গুরুপদবাবু এদিন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দাঁড়িয়ে বলেন, "বিয়ের দু'বছর পর থেকেই আমার মেয়ের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। কন্যাসন্তান হওয়ার পর এই অত্যাচার আরও বেড়ে যায়।"

পূজা দাসের মেয়ে হওয়ায় কখনও বাপের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ দিত শ্বশুরবাড়ির লোকজন। আবার কখনও ধান, চাল নিয়ে আসতে বাধ্য করত। গত মঙ্গলবার পাড়ার এক অনুষ্ঠানে যাওয়াকে কেন্দ্র করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পূজার উপরে অত্যাচার শুরু করে। সেই সময়ই তাঁর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।