স্বামীকে পছন্দ হয়নি, কুপিয়ে খুনের চেষ্টা মহিলার


বনগাঁ: বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির কোনওটিই পছ্ন্দ ছিল না গৃহবধূর। এনিয়ে অশান্তির জেরে দীর্ঘদিন বাপের বাড়িতেই থাকত সীমা মণ্ডল। শুক্রবার শ্বশুরবাড়িতে ফিরে গিয়ে ফের অশান্তির চেষ্টা করে সে। থান ইট তুলে শাশুড়িকে মারতে যায়। এই ঘটনায় মারমুখী স্ত্রীকে থামাতে এসে আক্রান্ত হন বাবলু মণ্ডল। স্বামীকেই ধারালো অস্ত্রের কোপ বসিয়ে দেয় ওই গৃহবধূ। এরপর গুরুতর আহত যুবককে তড়িঘড়ি বাগদা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর বনগাঁ হাসপাতালে ও পরে তাঁকে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে  স্থানান্তরিত করা হয়। এখন সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই যুবক। শুক্রবার চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁর বাগদা থানার মাথাভাঙা গ্রামে।

এদিকে আক্রান্ত যুবকের মা খেররানি মণ্ডলের অভিযোগের ভিত্তিতে গুণবতী গৃহবধূকে গ্রেপ্তার করেছে বাগদা থানার পুলিশ। ধৃতকে শনিবার বনগাঁ আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। এই ঘটনায় মাথাভাঙা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পাঁচ বছর আগে বনগাঁ থানার চাঁদা পানিচিতা এলাকার তরুণী সীমা মণ্ডলের সঙ্গে বাগদার মাথাভাঙা গ্রামের বাবলু মণ্ডলের বিয়ে হয়। দেখেশুনে বিয়ে হলেও শ্বশুরবাড়িতে এসেই মন খারাপ হয়ে যায় সীমার। স্বামী, শ্বশুরবাড়ির কোনওটিই তার পছ্ন্দ হয়নি। দিন কয়েক যেতেই স্বামীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করে সে। নতুন বউয়ের এমন আচরণ দেখে শ্বশুর ও শাশুড়ি তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। এই ঘটনায় আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যায় সীমা। অভিযোগ, স্বামী ও শ্বশুর- শাশুড়িকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় সে। মিথ্যা মামলায় ফাঁসি দেওয়ার ভয়ও দেখায়। এই পরিস্থিতির পর আর বাড়িতে থাকার সাহস পাননি শ্বশুর-শাশুড়ি। তাঁরা অন্যত্র চলে যান। এরপর স্বামীর সঙ্গে অশান্তি করে নিজের যাবতীয় জিনিসপত্র নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে যায় সীমা।

এই ঘটনার পর বেশ কিছুদিন বাবা-মাকে নিয়ে শান্তিতেই ছিলেন ওই যুবক। এদিকে সীমা চলে যাওয়ার পর শ্বশুর-শাশুড়ি বাড়িতে ফিরে আসেন। এই খবর পেয়েই ক্ষিপ্ত সীমা শুক্রবার দুপুরে ছোটভাইকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে চলে আসেন। আচমকা বউমাকে বাড়ির মধ্যে দেখে বৃদ্ধা শাশুড়ি ততক্ষণে প্রমাদ গুনতে শুরু করেছেন। অন্যদিকে শাশুড়িকে সামনে পেয়েই বচসা শুরু করে দেয় সীমা। আতঙ্কিত খেররানি বউমার হাত থেকে বাঁচতে পালানোর চেষ্টা করেন। তখন পলায়মান শাশুড়িকে লক্ষ্য করে থান ইট ছুঁড়তে যায় ওই গৃহবধূ। প্রাণে বাঁচতে চিৎকার শুরু করেন বৃদ্ধা। মায়ের আর্তনাদ শুনে ঘটনাস্থলে আসেন বাবলু মণ্ডল। মাকে বাঁচাতে যেতেই মারমুখী গৃহবধূ ধারালো অস্ত্রের কোপ বসিয়ে দেয় যুবকের হাতে। এদিকে মণ্ডল বাড়ির চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা চলে এলে রক্তাক্ত স্বামীকে ফেলে চম্পট দেয় সীমা। স্থানীয়রাই আক্রান্ত বাবলু মণ্ডলকে তড়িঘড়ি বাগদা হাসপাতালে নিয়ে যান। রাতেই সেখান থেকে আরজি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।