দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ৩ সন্তানের মাকে বিয়ে প্রেমিকের


আমতা: প্রেমিকার বাড়ি এলেন প্রেমিক। ঢুকতে বাধা পাওয়ায় চলল ভাঙচুর। ভেঙে ফেললেন বাড়ির দরজা। তারপর জোর করে বাড়িতে ঢুকে প্রেমিকার হাত ধরে বেরিয়ে এলেন। প্রেমিকাকে সঙ্গে নিয়ে সোজা মন্দিরে। বাধা দিলে নিজের গলায় ছুরি ঠেকিয়ে আত্মহত্যার হুমকিও দিলেন প্রেমিক। শেষে নির্বিঘ্নে ঈশ্বরের সামনে প্রেমিকার মাথায় সিঁদুর দিয়ে বিয়ে সারলেন প্রেমিক। রুদ্ধশ্বাস এমন দৃশ্য কোনও সিনেমার নয়। খোদ বাস্তবের।

সোমবার সকালে এমন দৃশ্যের সাক্ষী থাকলেন হাওড়ার মালিপাঁচঘড়া থানা এলাকার মাধববাবু লেনের বাসিন্দারা। তবে এখানে প্রেমিক শুধু প্রেমিকাকেই গ্রহণ করেছেন, এমন নয়, হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাঁর তিন সন্তানের দিকেও। ভরা সংসার পেয়ে গর্বিত নব বিবাহিত বর বছর পঁয়ত্রিশের সুরজ সাউ। খুশি কনে সরস্বতী সাউও। শুধু হতবাক বধূর প্রথম স্বামী নন্দলাল সাউ ও তাঁর পরিবারের লোকেরা। হতভম্ব এলাকার বাসিন্দারাও।

গোটা ঘটনার কথা কানে গেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় মালিপাঁচঘড়া থানার পুলিশ। কিন্তু তারাও নিরুপায়। তাদের বক্তব্য সুপ্রিম কোর্ট পরকীয়াকে বৈধতা দিয়েছে। এখানে সেটাই ঘটেছে। আমাদের কিছু করার নেই। অভিযোগ করতে এলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে আদালতে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দশেক আগে সরস্বতীর বিয়ে হয় হনুমান জুট মিলের কর্মী নন্দলালের সঙ্গে। সবই ঠিকঠাক চলছিল। হঠাৎই মাস পাঁচেক ধরে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় প্রতিবেশী সুরজের সঙ্গে। লোকমুখে ইতিউতি শুনলেও তা কার্যত বিশ্বাস করেননি নন্দলাল। তারপর সোমবার ঘটে এই ঘটনা। নন্দলালকে যে তাঁর বিশ্বাসের খেসারত এইভাবে দিতে হবে তা স্বপ্নেও ভাবেননি তিনি। তাঁর সাফ কথা, এরপর কি আর ওই বউকে ঘরে তোলা যায়? নন্দলাল যাই বলুন না কেন নববধূ বেশ খুশি। আর গর্বিত সুরজের বক্তব্য, "আমাদের প্রেমকে হারতে দিতে চাইনি। তাই এই কঠিন সিদ্ধান্ত। পুরুষের মতো কাজ করেছি।"

কী ঘটনা ঘটে এদিন? সরস্বতীর শাশুড়ি ভারতীদেবী বললেন, "হঠাৎ দেখি বউমা কাপড় গুছিয়ে রাখছে। কেন জিজ্ঞাসা করলে বলে গোছগাছ করছি। কয়েক ঘণ্টা পর সুরজ আসে। সন্দেহ হওয়ায় দরজা বন্ধ করে দিই। সুরজ দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পড়ে। তারপর বউমা ও ছেলেদের হাত ধরে কাপড়ের পুঁটলি নিয়ে বেরিয়ে যায়।" সোজা ওঠে পাশের শীতলা মন্দিরে। ততক্ষণে হইহই পড়ে গিয়েছে এলাকায়। হাজির হন অনেকেই। কেউ কেউ বাধা দিতে গেলে সুরজ নিজের গলায় ছুরি ঠেকিয়ে হুমকি দেয়, বাধা দিলে নিজের গলা কেটে আত্মহত্যা করবে। এরপর আর কেউ কিছু বলার সাহস করেনি। সুরজ নির্বিঘ্নে বিয়ে সেরে নববধূকে নিয়ে চলে যান অন্যত্র। পরকীয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় শুনেছে নন্দলালের পরিবার। তবে নিজের বাড়িতেই এই দৃশ্য দেখতে হবে, তিনি ভাবতেই পারেননি।