যাদবপুরে গবেষণায় তৈরি পদার্থ কমাবে দূষণ, শোষণ করবে CO2


কলকাতা: জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধিতে পরিবেশে দূষণ বাড়ছে। আর তার জেরে বাড়ছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং। বিজ্ঞানীদের গবেষণা বলছে, প্রায় ৮ হাজার বছর ধরে পৃথিবীর তাপমাত্রা প্রায় একই থাকলেও গত ১০০ বছরে তাপমাত্রা ০.৫ সেন্টিগ্রেড বেড়ে গেছে। বিশ্ব উষ্ণায়ন ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের। সমস্যার সমাধানে পরিবেশ বান্ধব বিকল্প শক্তি খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। এক্ষেত্রে দু'টি উল্লেখযোগ্য গবেষণা হল, সৌরশক্তির ব্যবহার এবং পরিবেশ থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণের উপায় খুঁজে বের করা। এতদিন পর্যন্ত আলাদা আলাদাভাবে এই দু'টি বিষয়ে গবেষণা চলছিল। এবার দু'টি বিষয়কে নিয়ে একসঙ্গে গবেষণা করে সাফল্য পেল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ‍্যা ও রসায়ন বিভাগ। গবেষণা করে তাঁরা এমন একটি পদার্থ তৈরি করেছেন যা সৌরশক্তিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তর করতে পারবে এবং একই সঙ্গে পরিবেশ থেকে CO2 (কার্বন ডাই অক্সাইড) শোষণ করতে সক্ষম।

সম্প্রতি অ্যামেরিকান কেমিকেল সোসাইটির জার্নাল 'ইনঅর্গানিক কেমিস্ট্রি'তে প্রকাশিত হয়েছে এই সংক্রান্ত গবেষণাপত্রটি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক পার্থপ্রতিম রায়, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক দেবজ্যোতি ঘোষালের নেতৃত্বে দিলীপ কুমার মাইতি, অর্ক দে, সহেলি ঘোষ ও অরিজিৎ হালদার নামে চার রিসার্চ স্কলার গবেষণাটি করেছেন।

পার্থপ্রতিমবাবু় বলেন, "যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ‍্যা বিভাগ ও রসায়ন বিভাগ একসঙ্গে মিলে কাজটা করেছে। আমরা প্রথম এমন একটি পদার্থ তৈরি করেছি যা একই সঙ্গে সৌরশক্তিকে তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তর করতে পারবে। পাশাপাশি বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করতে পারবে। দূষণ কমাতে একই পদার্থ দু'টো কাজ একসঙ্গে করবে, এটা আগে কখনও করা হয়নি।"

পদার্থটি তৈরি করা হলেও, এই নিয়ে গবেষণা এখানেই শেষ নয় বলে জানাচ্ছেন পার্থপ্রতিমবাবু। তিনি বলেন, "এরপরের ধাপটা আরও কঠিন। এরপরে এই পদার্থটির ব্যবহারিক প্রয়োগের জন্য আগামী দিনে এটিকে নিয়ে আরও বিস্তারিতভাবে গবেষণা করতে হবে।" প্রায় দু'বছরের গবেষণার ফল এই পদার্থটি।