ধৃত সুদীপ্তর সঙ্গে বেশ কিছু প্রভাবশালীর ছবি, নয়া তথ্য ED-র হাতে


কলকাতা: বাম আমলে উত্থান। পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা। এভাবেই নিজের জাল বিস্তার করেছিল ব্যবসায়ী সুদীপ্ত রায় চৌধুরি। সূত্রের খবর, তদন্তে এই তথ্যই পেয়েছেন ED-র তদন্তকারীরা।

সুদীপ্তকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন শুধু রোজ়ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডু নয়, সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন সহ প্রায় ১০ টি চিটফান্ডের মালিকের সঙ্গে CBI-এর সঙ্গে "সেটিং" করিয়ে দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল সুদীপ্ত। ধৃতের সঙ্গে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালীর যোগাযোগ রয়েছে বলেও জানতে পেরেছে ED। তার সঙ্গে কয়েকজনের ছবিও পাওয়া গেছে। অর্থ লেনদেনের বিষয়টিতে প্রভাবশালীদের কোনও যোগাযোগ আছে কি না তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

ED সূত্রে খবর, ধৃত ব্যবসায়ীর সঙ্গে রাজ্যের কয়েকজন মন্ত্রী, রাজ্যসভার একজন সাংসদ, কলকাতা পৌরনিগমের এক দাপুটে নেত্রী, রাজ্যের এক মন্ত্রীর মেয়ে, এমনকী মুখ্যমন্ত্রীর এক আত্মীয়ের সঙ্গেও সুদীপ্তর ছবি পাওয়া গেছে। সুদীপ্তর সঙ্গে তাঁদের কোনও আর্থিক লেনদেন ছিল কি না, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। চিটফান্ডের মালিকদের মনে ভরসা জাগানোর কাজে ছবিগুলি সুদীপ্ত ব্যবহার করেছিল কি না, তাও দেখা হচ্ছে। তবে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন ED-র সাসপেন্ড হওয়া অফিসার মনোজ কুমারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। CBI-এর কোনও অফিসারের সঙ্গে সুদীপ্তর ঘনিষ্ঠতা ছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

বাম আমলে সুদীপ্ত আবাসন প্রোমোটিংয়ের ব্যবসা শুরু করে। সোনারপুর এবং বারুইপুরে আবাসন প্রকল্পের কাজ চলার সময় কয়েকজন প্রভাবশালী CPI(M) নেতার সঙ্গে সুদীপ্তর ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কয়েকজন পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। এক তদন্তকারী অফিসার জানাচ্ছেন, পরে অবশ্য তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ায় সুদীপ্ত। পাশাপাশি হাত দেয় হোটেল ব্যবসাতেও। দিঘা, পুরী সহ একাধিক জায়গায় তার হোটেল আছে বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। সেই হোটেল ব্যবসায় চিটফান্ডের টাকা ব্যবহার করা হয়েছে কি না, সে দিকটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

সূত্রের খবর, রোজ়ভ্যালি কর্তা গৌতম কুণ্ডু তদন্তকারীদের জানিয়েছিলেন, CBI-এর সঙ্গে "সেটিং" করে দেওয়ার জন্য সুদীপ্ত তাঁর কাছ থেকে মোটা টাকা নিয়েছিল। সেই সূত্রেই তল্লাশি চালানো হয় সুদীপ্তর অফিসে। পরে তাকে জেরাও করা হয়। তদন্তকারীরা বেশ কিছু প্রশ্নের সদুত্তর না পাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সুদীপ্ত সেন সহ প্রায় ১০টি চিটফান্ডের মালিকের থেকে টাকা নিয়েছিল ধৃত। ED-র সন্দেহ অন্য জায়গায়, চিটফান্ড মালিকরা সুদীপ্তর মাধ্যমে টাকা অন্য কোথাও সরিয়ে ফেলেননি তো? আপাতত এ দিকটাতেই বেশি জোর দিচ্ছে ED।