চাকরি গেলেও পিএফ অ্যাকাউন্ট চালু রেখে তোলা যাবে ৭৫ শতাংশ টাকা


কলকাতা: চাকরি না থাকলে এখন থেকে পিএফে জমানো টাকার ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত তুলে নিতে পারবেন যে কোনও কর্মী। সম্প্রতি এই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাতে বলা হয়েছে, এই টাকা তোলা যাবে 'নন রিফান্ডেবল অ্যাডভান্স' হিসেবে। অর্থাৎ, যে টাকা পিএফ গ্রাহক তুলে নেবেন, তা তাঁকে আর শোধ করতে হবে না। পিএফ অ্যাকাউন্টটি সচল রাখার সুবিধা করে দিতেই এই নয়া উদ্যোগ নিয়েছে শ্রম মন্ত্রক, বলছেন দপ্তরের কর্তারা। তবে চাকরি যাওয়া বা কাজ ছাড়ার এক মাস পর এই টাকা তুলে নেওয়ার অধিকার পাবেন কর্মীরা। এতদিন চাকরি গেলে এবং পিএফ অ্যাকাউন্ট চালু রাখতে হলে টাকা তুলে নেওয়ার কোনও সুযোগ ছিল না।

পিএফের জন্য এখন প্রত্যেক কর্মীর একটি আলাদা বা ইউনিক নম্বর আছে। সেই ইউনিভার্সাল অ্যাকাউন্ট নম্বর বা ইউএএন থাকায় কোনও কর্মী এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় কাজে যোগদান করলে, সেই নম্বরটি ব্যবহার করে পিএফ অ্যাকউন্টটি চালু রাখতে পারেন। কিন্তু কেউ যদি পিএফের পুরো টাকা তুলে নেন, তাহলে তাঁর অ্যাকাউন্টটি বন্ধ হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে নতুন করে অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। সেক্ষেত্রে পিএফ অ্যাকাউন্ট চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি যে সুযোগ-সুবিধাগুলি পাওয়ার কথা, সেগুলি পান না গ্রাহক। অন্যদিকে, এতদিন পর্যন্ত চাকরি চলে গেলে, তার দু'মাস পর পিএফে জমানো পুরো টাকা তুলে নিতে পারতেন গ্রাহকরা। সেক্ষেত্রে কিছুটা টাকা তুলে, বাকি টাকা রেখে অ্যাকাউন্টটি সচল রাখার কোনও সুযোগ ছিল না। এবার সেই সুযোগই করে দিল এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন। তবে কাজ হারানোর দু'মাস পরেও যদি কেউ পিএফের পুরো টাকা তুলে নিতে চান এবং পিএফ অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দিতে চান, সেক্ষেত্রে আপত্তি করবে না দপ্তর। তবে কর্তাদের কথায়, পিএফ দপ্তর সব সময়ই চায় সামাজিক সুরক্ষার দিকটি মাথায় রেখে পিএফ অ্যাকাউন্টটি সচল রাখুন গ্রাহক। সেই কারণে যদি কোনও ব্যক্তি চাকরি যাওয়ার এক মাস পর তাঁর জমানো টাকার ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত অপরিশোধযোগ্য অগ্রিম বা অ্যাডভান্স হিসেবে তুলেও নেন, তাঁরা যেন বাকি টাকা রেখে পরবর্তী চাকরির জন্য অপেক্ষা করতে পারেন। তাতে দীর্ঘ মেয়াদে পিএফ জমানোর সুবিধাগুলি পাওয়া যাবে। তাছাড়া এখন পিএফে সুদের হার ৮.৫৫ শতাংশ এবং তা অন্য সরকারি সঞ্চয় প্রকল্পের চেয়ে বেশি। তাই সেই সুবিধাও ভোগ করতে পারবেন তাঁরা। অন্যদিকে, যদি কোনও মহিলা তাঁর বিয়ের কারণে চাকরি ছাড়তে চান এবং অ্যাকাউন্টের পুরো টাকা তুলে, পিএফ অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দিতে চান, তাহলে তাঁকে দু'মাস অপেক্ষা করার দরকার নেই। সেক্ষেত্রে তাঁর আবেদনের ভিত্তিতে পাওনা টাকা দিয়ে দেবে পিএফ দপ্তর।

দপ্তরের কর্তারা বলছেন, কোনও পিএফ গ্রাহকের চাকরি চলে গেলে, দু'মাস অপেক্ষা করার পর তাঁকে জমানো টাকার পুরোটাই তুলে নিতে হতো। সেক্ষেত্রে সেই টাকার কিছুটা তুলে, বাকি টাকা রেখে, অ্যাকাউন্ট চালিয়ে যাওয়ার কোনও সুযোগ ছিল না। কিন্তু এখন সেই সুযোগ পাবেন গ্রাহক। তিনি কয়েক মাস পর যদি ফের নতুন কোনও কাজে যোগ দেন, তাহলে অ্যাকাউন্টটি ফের সচল রাখতে পারবেন। তাতে গৃহঋণ, গৃহপ্রকল্প, পিএফ সংক্রান্ত বিমা, যে কোনও আপদকালীন ঋণ বা কেন্দ্রের দেওয়া আর্থিক সাহায্য থেকে বঞ্চিত হতে হবে না।