‘তথ্য জানতে এ বার না ব্রেন স্ক্যান করে কেন্দ্র’


যে ভাবে সব কিছু চলছে, তাতে তথ্য জানতে এ বার তো ব্রেন স্ক্যানও শুরু করে দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। শুক্রবার কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যক্তিগত তথ্যে নজরদারির বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে এমনই মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রের এই নজরদারির আসল উদ্দেশ্য রাজ্যগুলিকে কার্যত নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া।

এ দিন পার্ক স্ট্রিটের অ্যালেন পার্কে 'কলকাতা ক্রিসমাস ফেস্টিভ্যাল'-এর উদ্বোধন করেন মমতা। সেখানেই কেন্দ্রকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ''আমার সরকারের সব তথ্য যদি জেনেই নেয়, তা হলে আমার মন্ত্রগুপ্তির শপথ নেওয়ার কী দরকার?'' রাজ্য সরকারের আগাম অনুমতি নেওয়ার প্রসঙ্গ কেন্দ্রীয় বিজ্ঞপ্তিতে থাকলেও, সেখানে কী কারণে নজরদারি চালানো হচ্ছে, তা স্পষ্ট করা নেই বলে মমতার অভিযোগ।
কেন্দ্রীয় সরকার কম্পিউটার-সহ ব্যক্তিগত বিভিন্ন ক্ষেত্রের তথ্য জানার জন্য যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, তা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন তৃণমূল নেত্রী। মমতার বক্তব্য, ''উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে প্রতিহিংসায় এ সব কাজ হচ্ছে। এক জন মানুষের সব ব্যক্তিগত তথ্য কেড়ে নেওয়া হচ্ছে! এ তো স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়েও পরাধীন হয়ে যাওয়া! সরকারের কাজের পাশাপাশি ব্যক্তিগত গোপনীয়তা যে ভাবে খর্ব করা হচ্ছে, তাতে আমি শঙ্কিত। এতে গণতান্ত্রিক অধিকার কী আর থাকে? এই বিজ্ঞপ্তি অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।''
কোনও ব্যক্তি কোন ধর্মস্থানে যাচ্ছেন, তাও কেন্দ্র নজরে রাখতে চাইবে কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর আশঙ্কা, ''সব কম্পিউটার কেন্দ্রের নজরদারিতে চলে আসবে। সকালে এই বিজ্ঞপ্তি দেখার পর থেকেই আমরা চিন্তিত। এই বিজ্ঞপ্তির মানে তো যখন-তখন যেখানে-সেখানে ঢুকে পড়বে ওরা। যখন খুশি কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ঢুকিয়ে দেবে।''
ধর্মের ভিত্তিতে মানুষে মানুষে বিভেদের রাজনীতি করে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি অশান্তি বাধাতে চাইছে বলে বারবারই অভিযোগ করেন মমতা। এ দিন বড়দিনের প্রাক্কালে সেই অভিযোগের সুর চড়িয়েই তিনি বলেন, ''এ দেশে সন্তানদের নিয়ে থাকা যাব‌ে না বলে নাসিরুদ্দিন শাহ-ও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এখানে খ্রিস্টান ভাইবোনেরাও বোধহয় সেই কথাই বলবেন।'' ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে বিজেপি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট একটি ধর্মের তোষণ করতে চাইছে বলে মন্তব্য করেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, ''শুধু আমি আমার ধর্ম পালন করব, আর কেউ ধর্ম পালন করতে পারবে না, এটা কেন হবে? গিরগিটির মতো কেউ কেউ এসেছে, যারা শুধু লটে পুটে খেতে চায়। আর কিছু হলেই ভয় দেখিয়ে বলবে সিবিআই গ্রেফতার কর।