চালু হল ভারতের দীর্ঘতম সেতু, জীবিকা হারালেন বহু মানুষ


অসমে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর যখন ভারতের বৃহত্তম সেতুর উদ্বোধন আর সাধারণের উল্লাস, ঠিক তখনই যেন প্রদীপের নিচে অন্ধকার। যেসব লোক বছরের পর বছর ধরে নৌকায় মানুষ কিংবা জিনিস পারাপার করছেন, তাঁরা এবার নিজেদের পেশা হারানোয় ভয়ে শঙ্কিত।


পারাপারে যুক্ত ৪০ টি নৌকা
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৪০ টি নৌকা ব্রহ্মপুত্রের উত্তর থেকে দক্ষিণে কিংবা দক্ষিণ থেকে উত্তরে মানুষ এবং জিনিস পারাপারের কাজে যুক্ত। শুধু এসবই নয়, দুচাকা কিংবা ছোট গাড়িও পারাপার করে থাকে এইসব ছোট-বড় নৌকাগুলি। এগুলির মধ্যে দুটি নিয়ন্ত্রণ করে সরকার। বাকিগুলি বেসরকারি পর্যায়ে নিয়ন্ত্রিত হয়।

প্রত্যেক নৌকা চালনা করে তিনজন।
২৫ ডিসেম্বর ব্রহ্মপুত্রের ওপর বগিবিল ব্রিজ সেতুর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই সেতুর উদ্বোধনের পর ধেমাজি থেকে বড় হাসপাতাল কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমন কী ডিব্রুগড় বিমানবন্দরে অতি সাধারণ ভাবেই পৌঁছে যেতে পারবেন স্থানীয় মানুষ।
   

জীবনধারনের জন্য নতুন উপায়ের খোঁজ
শুধু নৌকায় কাজ করা লোকজনই নন, ঘাটে খাবারের দোকান কিংবা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে থাকা অন্য গাড়ির মালিক কিংবা কর্মীরা জীবনধারনের জন্য নতুন উপায়ের কথা চিন্তাভাবনা করতে শুরু করেছেন।


আয় ছিল ৩০ হাজার
বগিবিল ঘাটে খোঁজ পাওয়া গেল এক ফেরি চালকের। যৌথ পরিবারে ১২ জন সদস্য। দুজন নৌকা চালান। প্রতিবছরের শুরুতে তাঁদের দিতে হয় ৭৫ হাজার টাকা করে। তবেই মেলে অনুমতি। এছাড়াও রয়েছে নৌকার কর্মীদের মাইনে। সব বাদ দিয়ে প্রতিমাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা করে থাকে তাঁদের।
   

সময় লাগবে ১০ মিনিট
৪৫ মিনিট থেকে দুঘন্টা পর্যন্ত সময় লাগে একটি নৌকা পার করতে। ব্রিজ চালুর পর লাগবে ১০ মিনিট। শুধু সময়ই বাঁচবে না, টাকাও বাঁচবে। কেননা সরকার পরিচালিত নৌকার ভাড়া ১৮ টাকা। ছোট গাড়ির জন্য লাগে ৮০০ টাকা আর বড় গাড়ির জন্য হাজার টাকা। বেসরকারি পর্যায়ে এই ভাড়া অনেকটাই বেশি।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘাট থেকে নৌকাগুলিকে অন্যঘাটে সরিয় দেওয়া হবে। তবে বেসরকারি নৌকার মালিক থেকে কর্মীরা মনে করছেন, সরকারি পর্যায়ের মতো সুবিধা তাঁরা পাবেন না।

অসম অরুণাচলের মধ্যে যোগাযোগ সুগম
এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ব্রিজের ওপরে রয়েছে তিন লেনের রাস্তা। আর তার নিচে রয়েছে রেলের ডাবল লাইন। তৈরিতে খরচ পড়েছে ৫ হাজার কোটি টাকা।

এই ব্রিজ চালু হওয়ার ফলে অসমের ডিব্রুগড় এবং অরুণাচলের পাসিঘাটের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সুগম হল।