৩০ সেকেন্ডেই হাতসাফাই! এক রাতে চুরি ৯০টি গাড়ির ব্যাটারি


শাহজাদ, গুল মহম্মদ আর জুবের।তিন জনের গ্যাং।গাড়ির ভিতর থেকে ব্যাটারি বার করে চম্পট দিতে তাদের লাগে মাত্র ৩০ সেকেন্ড। 'দক্ষতা' এতটাই যে, এক রাতে ৯০টি গাড়ি থেকে ব্যাটারি চুরি করার রেকর্ডও করে ফেলেছে তারা। পুলিশের হিসাব, সব মিলিয়ে তারা চুরি করেছে প্রায় ৫ হাজার ব্যাটারি! তাদের দাপটে নাকাল হচ্ছিলেন দিল্লির গাড়ির মালিকেরা। শেষ পর্যন্ত পুলিশের জালে ধরা পড়েছে ওই গ্যাং।হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন রাজধানীর বাসিন্দারা!

গাড়ির ব্যাটারি চুরিতে এই গ্যাঙের দক্ষতা এতটাই যে, গত কয়েক মাস রীতিমতো আতঙ্কে কাটাচ্ছিলেন দক্ষিণ দিল্লির বাসিন্দারা। দিশেহারা হয়ে গিয়েছিল দিল্লি পুলিশও। পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে গত ১৫ ডিসেম্বর। এক রাতে ৯০টি গাড়ির ব্যাটারি চুরির অভিযোগ জমা পড়ে দিল্লির বিভিন্ন থানায়। এর পরই উঠে-পড়ে নামে দিল্লি পুলিশ।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মূলত দক্ষিণ দিল্লিতেই চলছে এই নিমেষে হাতসাফাই-এর কাজ। কোথায় কোথায় গাড়ি থেকে ব্যাটারি চুরি করা হচ্ছে, তা মানচিত্রে ফেলতেই বোঝা যায় কোন রুটে সক্রিয় এই গ্যাং। সেই মতো দক্ষিণ দিল্লির নিউ ফ্রেন্ডস কলোনিতে ফাঁদ পাতা হয়। ফাঁদে পা দেয় শাহজাদ, গুল মহম্মদ আর জুবের-এর গ্যাং।

জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে, ব্যাটারি চুরির সময় তিন জনের কাজই নির্দিষ্ট ছিল। চুরির সময় প্রথম জন একটি গাড়ি নিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে থাকত। কেউ তাড়া করলে বাকিদের গাড়িতে তুলে নিয়ে চম্পট দেওয়া ছিল তার কাজ। দ্বিতীয় জন ভুয়ো পাহারাদার সেজে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকত। তার কাজ ছিল আশপাশের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা। আর তৃতীয় জন করত, আসল হাতসাফাই-এর কাজ। এর পর গাড়ি থেকে ব্যাটারি খুলে তিন জনে পাড়ি দিত অন্য একটি গাড়ির দিকে। আর এই পুরো কাজটা করতে তাদের সময় লাগতমাত্র ৩০ সেকেন্ড। এমনটাই জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ।

দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (অপরাধ দমন) রামগোপাল নায়েক জানিয়েছেন, ''তিন জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ৫৫টি ব্যাটারি এবং একটি গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। কোনও একটি জায়গা থেকে প্রতি রাতে এরা গড়ে ৪০-৫০টি ব্যাটারি চুরি করত। তার পর পাড়ি দিত অন্য এলাকায়।''

গত ১৫ মাসে এই তিন জনের দল প্রায় ১৫০০ ব্যাটারি চুরি করেছে বলে জানা গিয়েছে। আপাতত পুলিশের জালে এই গ্যাং ধরা পড়ায় স্বস্তিতে দিল্লি পুলিশ। হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন দিল্লির গাড়ি মালিকেরাও।