গলায় চার্জারের তার পেঁচিয়ে খুন রজত! অবশেষে গ্রেফতার স্ত্রী অনিন্দিতা

অনিন্দিতা বার বার বয়ান বদল করায় ধন্দে পড়েন তদন্তকারীরা

নিউ টাউনে আইনজীবী রজত দে-কে খুনের অভিযোগে তাঁর স্ত্রী অনিন্দিতাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বার বার বয়ান বদল করেও শেষরক্ষা হল না। টানা পুলিশি জেরায় ভেঙে পড়লেন অনিন্দিতা। পুলিশ জানিয়েছে, গভীর রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে খবর, রজতের গলায় মোবাইল চার্জারের তার জড়িয়ে শ্বাসরোধ করা হয়। অনিন্দিতাই তাঁকে খুন করেছে বলে স্বীকার করে নেয়। এই খুনের ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত রয়েছে বলে সন্দেহ পুলিশের। তাঁকে আড়ালের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও দাবি পুলিশের। সে বিষয়ে মুখ খুলছেন না অনিন্দিতা। কে সেই ব্যক্তি?

পুলিশের অনুমান, দাম্পত্য কলহের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, রজত দে-কে খুনের পর নিজের মোবাইলের চ্যাট ডিলিট করে দেয় অনিন্দিতা। পুলিশ তাঁর মোবাইল, ল্যাপটপ খতিয়ে দেখছে। তবে অনিন্দিতার একার পক্ষে এ ভাবে খুন করা সম্ভব নয় বলে ধারণা তদন্তকারীদের। তবে এই ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা এখনও জানা যায়নি। খুনের অভিযোগ ছাড়াও তথ্যপ্রমাণ লোপাট, ষড়যন্ত্র-সহ বিভিন্ন ধারায় অনিন্দিতার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।

গত শনিবার নিউ টাউনের বিডি ব্লকের ফ্ল্যাট থেকে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী বছর ৩৪-এর রজত দে-র অচৈতন্য দেহ উদ্ধার হয়। এর পর থেকে গত সাত দিনে বার বার নিজের বয়ান বদলেছেন অনিন্দিতা। আগে তিনি দাবি করেন,  ঘটনার দিন স্বামীর সঙ্গে নয়, অন্য ঘরে শুয়ে ছিলেন। পাওয়ার অফ হয়ে যাওয়ায় তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। এর পর পাশের ঘরে গিয়ে দেখেন মেঝেতে বসে রয়েছেন রজত। গায়ে হাত দিতেই তিনি পড়ে যান। ভয় পেয়ে তখন প্রতিবেশীর বাড়ি চলে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছিলেন অনিন্দিতা। গত শুক্রবার ফের তাঁকে জেরা করে পুলিশ। জেরায় অনিন্দিতার দাবি, গলায় চাদর জড়িয়ে আত্মহত্যা করেছেন রজত। প্রমাণ হিসাবে ওই দিন তিনি একটি চাদরও পুলিশকে দেন।

অনিন্দিতা বার বার বয়ান বদল করায় ধন্দে পড়েন তদন্তকারীরা। রজত দে মৃত্যুরহস্যের রহস্যের কিনারা করতে আসরে নামেন বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার জ্ঞানবন্ত সিংহ।  শনিবার তাঁকে থানায় ডেকে জেরা করা হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত জেরার মাঝেই ভেঙে পড়েন অনিন্দিতা।

পুলিশ জানিয়েছে, রজত দে-কে খুনের আগে শিশুপুত্র এবং বাড়ির পোষা কুকুরকে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন অনিন্দিতা। ঘটনার রাতে অনিন্দিতার ভাই অভীক পাল পুলিশকে কোনও খবর দেননি। বা রজতকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ারও ব্যবস্থা করেননি। বরং তিনি বরানগরে ফোন করে রজতের বাবা সমীর দে-কে এ বিষয়ে জানান। সমীরবাবুই বরানগর থেকে নিউ টাউনে আসার পর পুলিশে খবর দেন। প্রথম থেকেই ছেলের খুনের অভিযোগে সরব হয়েছিলেন তিনি।