কৃষ্ণনগরে বেসরকারি ঋণদান সংস্থার কর্মীকে গুলি করে খুন


কৃষ্ণনগর: বুধবার সন্ধ্যায় ৩৪নম্বর জাতীয় সড়কে কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানার কালীরহাটে একটি বেসরকারি ঋণদান সংস্থার কর্মীকে গুলি করে খুন করল দুষ্কৃতীরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, সংস্থার কর্মীর কাছে টাকার ব্যাগ ছিল। তা ছিনতাই করে নিয়ে চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। যদিও পুলিস জানিয়েছে, টাকার ব্যাগ ছিল কিনা, তা এখনও জানা যায়নি। ঘটনার তদন্ত চলছে। খুনের পিছনে অন্য কারণও থাকতে পারে। সবদিক খতিয়ে দেখছে পুলিস। এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। জাতীয় সড়কে সাময়িক যান চলাচল বন্ধ থাকে। পুলিস ঘটনাস্থলে গিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম সৈকত ঘোষ(৩০)। তাঁর বাড়ি কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণির তরুণ সংঘের কাছে। মৃত যুবক একটি বেসরকারি ঋণদান সংস্থার কর্মী ছিলেন। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবক বাইকে চেপে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে অর্থ সংগ্রহ করতেন। এদিন সন্ধ্যায় শান্তিপুরের দিক থেকে জাতীয় সড়ক ধরে তিনি বাইক চালিয়ে একা কৃষ্ণনগর ফিরছিলেন। কালীরহাটের কাছে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা দুষ্কৃতীরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ওই গুলি তাঁর বুকে লাগে। গুলি লাগায় বাইক থেকে পড়ে যান সৈকত। এরপরেই দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, যুবকের পিঠে একটি ব্যাগ ছিল। ওই ব্যাগ নিয়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ব্যাগে টাকা থাকতে পারে। সেটি ছিনতাই করে পালায় দুষ্কৃতীরা।

এই ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। জাতীয় সড়কের দু'দিকে প্রচুর যানবাহন দাঁড়িয়ে পড়ে। প্রায় আধঘণ্টা যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিস গিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। কৃষ্ণনগর পুরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার নিতুরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, আমার ওয়ার্ডেই বাড়ি মৃত যুবকের। একটি বেসরকারি ঋণদান সংস্থায় কাজ করতেন। এদিন কাজ সেরেই বাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। রাস্তায় তাঁকে গুলি করে খুন করা হয়। তাঁর ব্যাগে টাকাও থাকতে পারে। টাকার পরিমাণ কত ছিল, তা এখনও কেউ বলতে পারছে না। পুলিস ঘটনার তদন্ত করুক। আমরা চাই দোষীরা যেন দ্রুত ধরা পড়ে এবং কঠোর শাস্তি পায়।

মৃতের কাছে টাকার ব্যাগ ছিল কিনা, তা এখনও পুলিস জানতে পারেনি। তবে মৃতের পকেটে দামি মোবাইল ও সোনার আংটি ছিল। সেগুলি অবশ্য খোয়া যায়নি। পুলিসের একটি সূত্রের খবর, অন্ধকারের মধ্যে এই ঘটনাটি ঘটেছে। ফলে ব্যাগ থাকলেও সেটা দুষ্কৃতীরাই নিয়ে গিয়েছে এমনটা নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। স্থানীয়রাও ব্যাগ সরাতে পারে। এই খুনের পিছনে অন্য কারণও থাকতে পারে। ঋণদান সংস্থায় ঋণগ্রহীতাদের প্রায়শই তাগাদা দিতে হয়। এই খুনের পিছনে কোনও ঋণ গ্রহীতা থাকতে পারে, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। একই সঙ্গে বেসরকারি ঋণদান সংস্থার অন্যান্য কর্মীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। 
জেলার পুলিস সুপার রূপেশ কুমার বলেন, একটি বেসরকারি ঋণদান সংস্থার কর্মীকে গুলি করে খুন করা হয়েছে। টাকার ব্যাগ ছিল কিনা, তা এখনও জানা যায়নি। খুনের কারণ জানতে তদন্ত চলছে। দ্রুত গ্রেপ্তার হবে অপরাধীরা।