অভিযুক্ত পড়শি ‘কাকু’ বাড়িতে ডেকে ধর্ষণ, রক্তাক্ত নাবালিকা


মাঝবয়সী প্রতিবেশীকে 'কাকু' বলে ডাকত মেয়েটি। সেই 'কাকু'র বিরুদ্ধেই উঠল বছর দশেকের ওই নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ।

ঘটনাস্থল সবংয়ের দশগ্রাম এলাকা। রবিবার সন্ধ্যায় সবং থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন নিগৃহীতার মা। তবে অভিযুক্ত বছর পঁয়তাল্লিশের ননীগোপাল মাজি ঘটনার পর থেকেই পলাতক বলে পুলিশের দাবি। রবিবার ঘটনার পরে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ওই বালিকাকে সবং হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। সোমবার মেদিনীপুর মেডিক্যালে শারীরিক পরীক্ষার পরে মেদিনীপুর জেলা আদালতে গোপন জবানবন্দির জন্য নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বালিকার বাবা রবিবার দিনমজুরের কাজে মোহনপুর গিয়েছিলেন। আর মা গ্রামেই একটি জমিতে মজুর খাটতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে দিদি ও ভাইয়ের সঙ্গে ছিল ওই বালিকা। দুপুরে বাড়ির বাইরে ঘুরছিল সে। তখনই উল্টো দিকের বাড়ির মালিক ননীগোপাল তাকে ডাকে। পড়শি 'কাকু'র ডাকে সাড়া দিতে দ্বিধা বোধ করেনি ওই বালিকা। ননীগোপালের নিজের মেয়ে তখন অন্য ঘরে ঘুমোচ্ছিল। তার খোঁজে এই বালিকা ননীগোপালের বাড়ির ভিতরে ঢুকে যায়। সেই সময়ই ননীগোপাল তার মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। কাউকে না জানানোর জন্য হুমকিও দেয়।

ওই বালিকা বাড়ি ফিরলে তার দিদি বোনকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে সব কিছু জানতে চায়। ওই নাবালিকা তখন সব খুলে বলে। তার পরে দুই বোন মিলে কাছেই মামাবাড়িতে যায়। খবর পেয়ে চলে আসেন নাবালিকার মা ও বাবাও। গ্রামে শোরগোল পড়ে। এরপর নিগৃহীতার পরিজনেরা এবং গ্রামবাসী ননীগোপালের বাড়িতে যান। ততক্ষণে অবশ্য ননীগোপাল বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। ততক্ষণে সিভিক ভলেন্টিয়ারের মাধ্যমে থানায় খবর যায়। আসে পুলিশ। পরে থানায় গিয়ে ননীগোপালের বিরুদ্ধে মেয়েকে ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই নাবালিকার মা। এ দিন নিগৃহীতার বাবা বলেন, "ননীগোপাল সারাদিন মদ্যপ অবস্থায় থাকে, জুয়া খেলে। ও আমার মেয়ের যে এমন সর্বনাশ করবে, তা কখনও ভাবিনি। ওর কঠোর শাস্তি চাই।''

এ প্রসঙ্গে চাইল্ড লাইনের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা আহ্বায়ক বিশ্বনাথ সামন্ত বলেন, ''শিশুর যৌন নিগ্রহের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা দেখেছি পরিচিত ব্যক্তি জড়িত থাকেন। এক্ষেত্রে শিশুকন্যার বেড়ে ওঠার সময় বাবা-মায়ের উচিত তৃতীয় ব্যক্তির সঙ্গে শিশুর মেলামেশায় নজর রাখা। আমরাও স্পর্শের ভাল-মন্দ বোঝাতে শিবির করি। তবে বাব-মা-পরিজনেরা আরও সচেতন হলে এই প্রবণতা কিছুটা কমবে বলে আশা।''