হিন্দু–মুসলিম লড়াইয়ে আর কত পিতার মৃত্যু হবে?‌ প্রশ্ন পিতৃহারা সন্তানের


শোকস্তব্ধ। দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। এদিন পরীক্ষা ছিল অর্থনীতির। বাবা পুলিস অফিসার সুবোধ সিং পরীক্ষার আগে ছেলেকে বলেছিলেন, '‌গতবারের মতো ভুল কোরো না। এবারে ভাল করে মন দিয়ে পরীক্ষা দিও।' কিন্তু ছেলে যখন ফিরে এল, তখন আর পরীক্ষা কেমন হয়েছে প্রশ্ন করার জন্য বাবা ছিলেন না। বুলন্দশহরের ঝামেলায় ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে সুবোধ সিংয়ের। 
ইন্দ্রপূরম দিল্লি পাবলিক স্কুলের ছাত্র অভিষেক। বাবাকে অন্ধের মতো ভক্তি করত সে। জাতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিষেক জানিয়েছে, '‌দুপুর দেড়টা নাগাদ আমি স্কুল থেকে ফিরে এসেছিলাম। আমাকে একজন ফোন করে বলেন, আমার বাবার মাথায় গুলি লেগেছে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তারপর বাড়ি ফিরে এসে শুনি অন্য কথা। বাবা নাকি আহত। তখন সকলের মধ্যে নানা কথা আলোচনা চলছে। কেউ বলছে বাবার মৃত্যু হয়েছে, কেউ বলছে বাবা আহত। কিন্তু সত্যিটা কেউ বলতে পারছিল না। দুপুর আড়াইটে নাগাদ আমাকে স্পষ্ট করে বলা হয়, দেহের ময়নাতদন্ত হয়ে গিয়েছে।

আমাকে বলা হয়, যে গ্রামে গোরক্ষকরা পাথর ছুঁড়ছিল, সেখানে কাজ করতে গিয়েছিলেন বাবা। সেখানে তাঁর মাথায় পাথরের আঘাত লাগে। বাবা অজ্ঞান হয়ে যান। এরপরে চিকিৎসার জন্য তাঁকে নিয়ে আসার সময়েই তাঁর গুলি লাগে, ঠিক ভুরুর উপরে। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।

বাবা আমায় শিখিয়েছিলেন, ধর্মের নামে লড়াই সভ্য মানুষের কাজ নয়। কারণ ধর্ম, জাতপাত নির্বিশেষে, সকলেই আমরা মানুষ। আর আমাদের সকলের মধ্যেই মানবিকতার সেই বোধ থাকা প্রয়োজন। আমি একটা প্রশ্ন আজ সবাইকে জিজ্ঞাসা করতে চাই। আর কতদিন এভাবে হিন্দু–মুসলিমের লড়াইয়ের মাঝে পড়ে আমাদের মতো সন্তানকে পিতৃহারা হতে হবে।'‌