সাতটা বিয়ে সম্ভব হল না, শ্রীঘরে গেলেন পাত্র

ধৃত অভিজিৎ মণ্ডল ওরফে শেখ মুজিবুর রহমান।

আগে চারটি বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এই শীতের মরসুমে আরও তিন যুবতীর গলায় বিয়ের মালা পরানোর কথা ছিল! দিনক্ষণও পাকা। বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সপ্তম বিয়ে করে 'রেকর্ড' গড়ে ফেলার মুখে ছিলেন। কিন্তু তার আগে দিঘায় পুলিশের জালে ধরা পড়লেন গুণধর পাত্র!

ঠকবাজ এই পাত্রের গুণের শেষ ছিল না। যেমন স্বভাবে, তেমনই কাজে। ব্যবহারে অত্যন্ত বিনয়ী। মুখে সব সময় দেশভক্তির কথা। নিজেকে পেশায় সিআরপিএফ জওয়ান বলেও পরিচয় দিতেন। দেখে বোঝার উপায় নেই তিনি প্রতারক হতে পারেন। যেমনটা বুঝতে পারেননি ওই সাত যুবতীর পরিবার।

ওই প্রতারকের নাম অভিজিৎ মণ্ডল ওরফে শেখ মুজিবুর রহমান। বিয়ে করে টাকা হাতানোর উদ্দেশ্যই ছিল তাঁর। কখনও হিন্দু নাম নিয়ে, কখনও আবার মুসলমান পরিচয়ে বিয়ে করেছেন আদতে বীরভূমের লাভপুরের ওই বাসিন্দা।

পুলিশ সূত্রে খবর, ইদানীং কলকাতার পাটুলিতে ভাড়া থাকতেন মুজিবুর। খবরের কাগজে বিয়ের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে পাত্রীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলতেন তিনি। প্রতিবারই বিজ্ঞাপনে আলাদা ঠিকানা এবং পরিচয় দিতেন প্রতারক।

এ বছরের শুরুর দিকে একটি খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেখে বেহালার এক পাত্রীর বাবা ফোনে মুজিবুরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন তিনি নিজেকে অভিজিৎ বলে পরিচয় দেয়। ফোনে বলেন, ''আমি সিআরপিএফ জওয়ান। বাবা রাজ্য পুলিশের অফিসার ছিলেন। ১৭ বছর আগে মারা গিয়েছেন।'' পাটুলির ঠিকানায় দু'পক্ষের দেখাশোনা হওয়ার পর জুন মাসে বিয়ে হয়। বেশ কিছু দিন সংসারের পর ওই তরুণী জানতে পারেন, তাঁর স্বামী আগে থেকেই বিবাহিত। অভিজিৎ নয়, তাঁর আসল নাম মুজিবুর। গোপনে মোবাইলে নজরদারি চালিয়ে ওই তরুণী বেশ কিছু তথ্য জোগাড় করে পুলিশে অভিযোগ করেন। তদন্তে নামে সরশুনা থানা।

খোঁজখবর করে জানা যায়, একটি নয়আগেআরও তিনটি বিয়ে করেছেন ওই প্রতারক। তার পর থেকেই হন্যে হয়ে খোঁজ চালাচ্ছিল সরশুনা থানার পুলিশ। শেষে দিঘা থেকে পাকড়াও করা হয় তাঁকে। ধরা পড়ার পর জানা গিয়েছে, আরও তিনটি বিয়ে করার পরিকল্পা ছিল তাঁর। এই ঘটনার পিছনে আরও অনেকে জড়িত হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।