রাস্তায় অতিরিক্ত স্পিড ব্রেকার, প্রতিবাদে ধর্মঘট বাস মালিকদের


বর্ধমান: বর্ধমানের দক্ষিণ দামোদরের আরামবাগ রোডে ৮৮টি বাম্পার তোলার দাবীতে সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা বাস ধর্মঘট কয়েকঘণ্টার মধ্যেই তুলে নিলেন বর্ধমান জেলা বাস মালিক অ্যাসোসিয়েশন।

ঘটনার জেরে সোমবার হয়রানির শিকার হতে হয় যাত্রীদের৷ এদিন দিনভর বাস বন্ধ রাখার পর বিকেল নাগাদ সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রশাসনের বৈঠকের পর ধর্মঘট তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ তবে এই ধর্মঘট তুলে নিলেও রাজনৈতিক দলগুলির বিরুদ্ধে টাকা আদায়ের জুলুমের অভিযোগ তোলেন বাস মালিকেরা৷ এমনকি এই জুলুম বন্ধ না হলে আগামী দিনে বড় আন্দোলনে যাওয়ার দাবিও তোলেন তারা৷ জানা যাচ্ছে প্রশাসনের উদাসীনতায় প্রশাসনের নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েও বর্ধমান শহর দিয়ে প্রায় ৫২টি বাস অবৈধভাবে চলাচল করার দাবিকে সামনে রেখে ব্যাপক আন্দোলনে নামতে চলেছেন বাস মালিকরা।

সোমবার বাস মালিক এ্যাসোসিয়েশনের সদস্য শরত কোনার জানিয়েছেন, গত এক মাসে বর্ধমান আরামবাগ রোডের ৪৪ কিলোমিটার রাস্তায় একের পর এক গজিয়ে উঠেছে স্পিড ব্রেকার। এই স্পিড ব্রেকার গুলির মধ্যে কয়েকটি তৈরী করেছে কোথাও বানিয়েছে পিডব্লুওডি বানিয়েছে আর কিছু তৈরি করেছে পুলিশ।

বাস মালিকদের অভিযোগ এই স্পীড ব্রেকারের কারনে তাদের গাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে৷ বিকল হচ্ছে যন্ত্রাংশ। তাদের অভিযোগ জেলা প্রশাসনের কাছে দফায় দফায় বাম্পার তুলে দেওয়ার দাবি জানানো কোনও সমাধান হয়নি৷ শেষমেষ সমাধান পেতে তারা ধর্মঘটের ডাক দেন৷

এক বাস মালিক জানান, " যতদিন যাচ্ছে বাস চালানো দায় হয়ে যাচ্ছে। লাভের পরিমাণ প্রতিদিনই কমতে কমতে এখন তলানিতে এসে ঠেকেছে। এরই মাঝে পথে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা জোরজবরদস্তি করে ৫০ হাজার থেকে লাখ লাখ টাকা দাবী করা হচ্ছে। না দিলে মারধর, বাস পুড়িয়ে দেবার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, এভাবে তাঁদের পক্ষে বাস চালানো সম্ভব নয়। এব্যাপারেও তাঁরা বারবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। কিন্তু লাভ হয়নি"। তিনি জানিয়েছেন, "খুব শীঘ্রই তাঁরা এই ইস্যুতেই বাসের ওপর জুলুম বন্ধের দাবীতে গোটা জেলা জুড়েই বাস ধর্মঘটের পথে যাচ্ছেন"।

অন্যদিকে মঙ্গলবার বিকালে বাস মালিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর জেলা পরিবহণ আধিকারিক রাণা বিশ্বাস জানিয়েছেন," এদিন বাস মালিকদের কাছ থেকে কিভাবে এই বাম্পার কমানো যায় সে ব্যাপারে পরার্মশ চাওয়া হয়েছিল। সংগঠনের পক্ষ থেকে ১৯টি জায়গার বাম্পার তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার রোড সেফটি নিয়ে বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।" তিনি জানিয়েছেন, "এই বাম্পার তৈরীর সুফল মিলেছে। গত আগষ্ট মাসের আগে পর্যন্ত যেখানে ৫০টি পথ দুর্ঘটনা ঘটেছিল এই রুটে, সেখানে গত নভেম্বর মাসে মাত্র ২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।" তাই মানুষের প্রাণ আগে – এই বিষয়টিকে মাথায় রেখেই বাস মালিকদের দাবীর প্রতি সুবিচার করে আলোচনা হবে।"