না জেনেই অন্তঃসত্ত্বাকে রক্তদান, আত্মহত্যার চেষ্টা এইচআইভি পজিটিভ কিশোরের

সরকারি হাসপাতালের গাফিলতিতে এইচআইভি পজিটিভ কিশোরের রক্ত দেওয়া হয় অন্তঃসত্ত্বাকে।

বছর দুয়েক আগে থেকেই এইচআইভি পজিটিভ কিশোরটি। কিন্তু, তা জানা ছিল না কারও। এক অন্তঃসত্ত্বাকে রক্তদান করার পর তা প্রকাশ্যে আসে। তবে তত ক্ষণে বিপদ ঘটে গিয়েছে। এইচআইভি পজিটিভ ওই রক্ত চলে গিয়েছে অন্তঃসত্ত্বা মহিলার দেহে। তামিলনাড়ুতে এক সরকারি হাসপাতালের গাফিলতিতে এ নিয়ে তুমুল বিতর্কের মধ্যেই বৃহস্পতিবার আত্মহত্যার চেষ্টা করল রক্তদানকারী ওই কিশোর। আপাতত মাদুরাইয়ের এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সে।

পুলিশ জানিয়েছে, গত ৩ ডিসেম্বর বিরুধুনগর জেলায় সত্তুরে একটি সরকারি হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষা করাতে এসেছিলেন এক অন্তঃসত্ত্বা। তাতে ধরা পড়ে,তাঁর রক্তাল্পতা রয়েছে। হাসপাতাল থেকে রক্তদানের ব্যবস্থা করা হয়। সে সময় ওই কিশোরের রক্ত মহিলাকে দেওয়া হয়েছিল। রক্তদানের চার দিন পর ধরা পড়ে, ওই রক্ত এক এইচআইভি পজিটিভ কিশোরের।

ঘটনার পরই রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থার রুগ্‌ণ চেহারা নিয়ে সরব হয়েছেন অনেকে। এ নিয়ে প্রশাসনিক তৎপরতাও শুরু হয়। প্রাথমিক তদন্তের পর ওই হাসপাতালের ব্ল্যাড ব্যাঙ্কের তিন জন স্বাস্থ্যকর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২০১৬-তে সত্তুরের একটি শিবিরে রক্তদান করেছিল ওই কিশোর। তবে সে সময়ও  তাকে এইচআইভি পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি জানানো হয়নি। গত ৩০ নভেম্বর সত্তুরের হাসপাতালে ফের রক্তদান করে সে। এ বারও ব্ল্যাড ব্যাঙ্কের তরফে কোনও কথা জানানো হয়নি।দিন কয়েক আগে একটি বেসরকারি ল্যাবে রক্ত দিতে গিয়ে ধরা পড়ে, ওই কিশোরটি এইচআইভি পজিটিভ। এ নিয়ে সরকারির হাসপাতালে গাফিলতি নিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েছে রাজ্য প্রশাসন। মাদ্রাজ হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত একটি মামলা রুজু করেছে। গোটা বিষয়ে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তা নিয়ে আগামী ৩ জানুয়ারির মধ্যে  রাজ্য সরকারকে একটি রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, এইচআইভি পজিটিভ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে কোনও ব্যক্তি রক্তদান করলে তা এলাইজা টেস্টের মাধ্যমে অনেক সময়ই ধরা পড়ে না। বিশেষজ্ঞদের একাংশের পরামর্শ, এলাইজা টেস্টের পরিবর্তে নিউক্লিক অ্যাসিড টেস্ট অনেক বেশি ফলপ্রসূ হতে পারে। পাশাপাশি, তাঁদের পরামর্শ, রক্তদানকারীদের সম্পর্কে সমস্ত তথ্য অনলাইনে রাখা উচিত হাসপাতালগুলির। এর ফলে কোনও এইচআইভি পজিটিভ ব্যক্তিকে রক্তদান করা থেকে বিরত করা আরও সহজ হবে।