ক্যানসার জয় করে ঘরে ফিরলেন সোনালী, তার আগে দিলেন এক মর্মস্পর্শী বার্তা


ঘরে ফিরলেন সোনালী। যে ক্যানসার গত কয়েক মাস ধরে তাঁর এবং তাঁর পরিবারের উপর করাল গ্রাসের উপর নেমে এসেছিল আপাতত তাকে প্রতিহত করা গিয়েছে। যার ফলে পাঁচ মাস পর ঘরে ফিরলেন সোনালী। রবিবার গভীররাতে স্বামী গোল্ডি বহেল-এর সঙ্গে মুম্বই বিমানবন্দরে এসে পৌঁছন সোনালী। 

মুম্বই বিমানবন্দরেই গভীররাতে সোনালীকে নিতে হাজির হয়েছিলেন তাঁর আত্মীয়-পরিজন। ছিলেন বেশকিছু সিনেমাপ্রেমী এবং সংবাদমাধ্যম। লাউন্জ থেকে বেরিয়ে করজোড়ে সকলের উদ্দেশে নমষ্কারের ভঙ্গিতে বেরিয়ে আসেন সোনালী। চোখে-মুখে ছিল এক অসামান্য লড়াইয়ের ঝলক। সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতায় মুখের কথা প্রায় হারিয়ে ফেলেছিলেন সোনালী। চোখে ছিল আনন্দাশ্রু। স্বামী গোল্ডি-কে পাশে নিয়েই মুখোমুখি হন সংবাদমাধ্যমের। গোল্ডি জানান, 'সোনালি এখন ভালোই আছেন। আর সেই কারণে তিনি ফিরে এসেছেন।' সোনালী দ্রুত সুস্থ হচ্ছেন বলেও জানান গোল্ডি। এখনকার মতো চিকিৎসা শেষ হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে যে কোনও মুহূর্তেই যে ক্যানসারের জীবাণু আক্রমণ শানাতে পারে সে আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন গোল্ডি। সেই কারণে সোনালীকে নিয়মিত চেকআপ-এর মধ্য়েও থাকতে হবে। 

ক্যানসারের চিকিৎসার পর তিনি যে মুম্বই-এ ফিরছেন তা রবিবার সকালেই জানা গিয়েছিল। কারণ বলিউড নায়িকা নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সে খবর জানিয়েছিলেন। আর সেই সঙ্গে লিখেছিলেন এক মর্মস্পর্শী বার্তা। এতেই সোনালী জানান, ক্যানসারের চিকিৎসা চলাকালীন তিনি অনেককিছু শিখেছেন। আর সেই অভিজ্ঞতার কাহিনি তিনি বই আকারে বের করতে চান। 

ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে সোনালীর লেখা এই বার্তা ছিল আবেগেভরা। লেখার প্রতিটি লাইনে লাইনে ফুঁটে বেরিয়েছে সোনালীর মানসিক অবস্থা। কীভাবে তিনি ক্যানসারের বিরুদ্ধে দাঁতে দাঁত কষে লড়াই করেছেন তাও ফুঁটে উঠেছে এই বার্তায়। তিনি লিখেছেন, 'দূরত্ব হৃদয়কে প্রচণ্ডভাবে আবেগতাড়িত করে ফেলে। কিন্তু দূরত্ব যে শিক্ষা দেয় তাকে কখনও ছোট করে দেখা উচিত নয়। বাড়ি থেকে অনেক দূরে নিউ ইয়র্কে থাকতে থাকতে আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমি অনেকগুলো গল্পের মধ্যে দিয়ে হেঁটে বেড়াচ্ছি। প্রতিটি গল্পই যেন ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে তাদের নিজ নিজ কথা বলতে চাইছে। প্রতিটা লড়াই-এ এমনটা হয় কিন্তু তা বলে হাল ছেড়ে দেওয়ার কোনও মানে হয় না। প্রতিটি গল্পই একদিন না একদিন পূর্ণতা পায়। এবং এখন আমি আমার ফিরে যাওয়ার পথে যেখানে আমার হৃদয় সবসময় পড়ে থাকে। এটা একটা অনুভূতি, আমি এটাকে ভাষায় বুঝিয়ে উঠতে পারব না। কিন্তু আমি চেষ্টা করব। পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে ফের দেখা হবে ভেবে আমার খুব আনন্দ হচ্ছে। আমি যে কাজটা করতে ভালবাসি, সেগুলো আবার করতে পারব ভেবে উত্তেজনা হচ্ছে। এবং যেভাবে প্রথম থেকে এই মুহূর্ত পর্যন্ত আমার পাশে তাঁরা রয়েছে তাতে তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। লড়াই এখনও শেষ হয়নি। কিন্তু আমি খুশি এবং এই সুখকর অবসরকে আমি সামনের দিকে তাকানোর অবকাশ হিসাবেই ধরছি। সামনে একটা নতুন স্বাভাবিক জীবন এবং আমি সেটাকে পুরোপুরি ভোগ করতে চাই এবং সূর্যের আলোয় নিজেকে মাখিয়ে নিতে চাই, সারাজীবনের মতো একটা দুর্জয় অভিযানে নিজেকে মেলে ধরছি।'