বিক্ষোভের মুখেও অনড় মহিলারা পৌঁছালেন শবরীমালায়


আত্মবিশ্বাস ও মনের জোর এই দুই পুঁজি সম্বল করে শবরীমালা মন্দিরের বেস ক্যাম্পে পৌঁছলেন ১১ জন ঋতুমতী মহিলা৷ রবিবার ভোররাতে পুলিসি ঘেরাটোপে ১১ জনের একটি মহিলার দল পৌঁছান পাম্বা বেস ক্যাম্পে৷ এই পাম্বা থেকে আর মাত্র ৪ কিমি দুরে আয়াপ্পার মন্দির৷ ১১ জনের মধ্যে ৬ জন মহিলা এসেছেন মাদুরাই থেকে৷ বাকি পাঁচ জন মন্দিরে ঢুকবেন না৷ কিন্তু ওই ছয়জনের মনোবল বাড়াতে সবসময় তাঁদের পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন৷

এদিকে মন্দিরের ঐতিহ্য কিছুতেই ভাঙতে নারাজ হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ও মন্দির কর্তৃপক্ষ৷ তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁরা কিছুতেই মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশ মেনে নেবেন না৷ অপরদিকে মহিলারাও তাঁদের সিদ্ধান্তে অটল৷ পুলিসকে সাফ জানিয়েছেন, আয়াপ্পাকে দর্শন না দিয়ে কিছুতেই তাঁরা ফিরে যাবেন না৷ সবমিলিয়ে টানটান উত্তেজনা শবরীমালাতে৷ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মহিলারা এসেছেন শবরীমালা মন্দিরে৷ উদ্দেশ্য আয়াপ্পা দর্শন৷ তামিলনাড়ু, কেরল, পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা থেকে ৫০ জনের মহিলা দল রওনা দেয় শবরীমালার দিকে৷ অতীতে বিভিন্ন সময়ে মহিলারা পৃথকভাবে শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন৷ কিন্তু প্রতিবারই বিক্ষোভের জেরে তাঁদের ফিরে আসতে হয়েছে৷ তাই এবার মহিলারা ঠিক করেছেন তাঁরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে মন্দিরে ঢোকার চেষ্টা করবেন৷

মহিলাদের একজন জানিয়েছেন, তাঁদের দলে অনেক দলিত মহিলা আছেন যাঁরা আজ আয়াপ্পা দর্শনের জন্য শবরীমালা যাবেন৷ সরকার ও পুলিসের উচিত তাঁদের ঠিকমতো নিরাপত্তা দেওয়া৷ আরও এক মহিলা নিজেকে আয়াপ্পার প্রকৃত ভক্ত বলে উল্লেখ করে জানিয়েছেন, আজ তাঁরা অনেক সংখ্যায় হাজির হয়েছেন৷ আশা করা যায় আজই শবরীমালায় প্রবেশ করতে পারবে তাঁরা৷ দলের বেশিরভাগ সদস্য ২০ থেকে ৩০ বয়সী৷ শবরীমালা মন্দিরে ৫০ বছরের উর্ধ্বে মহিলাদের ঢোকা নিয়ে কোনও আপত্তি নেই বিক্ষোভকারীদের৷ কিন্তু ৫০ বছর অবধি যে দর্শনার্থী মহিলারা বাঁচবেন এমন নিশ্চয়তা তো নেই৷

এদিকে মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশে সবরকমের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন৷ মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে মন্দিরের প্রধান পুরোহিত হুমকির সুরে বলেন, '‌ঐতিহ্য ভাঙলে তা বরদাস্ত করা হবে না৷'‌ তিনি মন্দিরের দরজা ও সবধরনের রীতিনীতি বন্ধ করার হুমকিও দেন৷ পাম্বার এক  পুলিস আধিকারিক জানান, ১১ জন মহিলা এলেও তাঁদের মধ্যে ৬ জন মন্দিরে  যাবেন।