মোদী-হত্যার ছক কষেছিল এই জঙ্গি, বাংলার আদালতে ষড়যন্ত্রকারীর ফাঁসির সাজা


একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনায় তো জড়িত ছিলই, এমনকী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হত্যারও ষড়যন্ত্র করেছিল সে। এমনই এক ষড়যন্ত্রকারী জঙ্গি শেখ সমীর ওরফে মহম্মদ নঈমকে মৃত্যুদণ্ড দিল বনগাঁ মহকুমা আদালত। বিচারক বিনয়কুমার পাঠক তাঁকে ফাঁসির সাজা শোনান। শনিবার মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণার পরও সে বিচারককে জানায়, কোনও বিস্ফোরণে যুক্ত ছিলাম না।

২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে পেট্রাপোল সীমান্তের একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে জঙ্গি সন্দেহে চারজনকে গ্রেফতার করে বিএসএফ। ধৃত মহম্মদ নইম ওরফে শেখ সমীর, মহম্মদ ইউনিস, শেখ আবদুল্লা ও মুজাফ্ফর আহমেদ রাঠোরের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগসহ যুদ্ধ ঘোষণা, অস্ত্র মজুত-সহ কয়েকটি ধারায় মামলা রুজু করে।

এই মামলায় বছর খানেক আগেই সমীর ছাড়া বাকি তিনজনের ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেছিলেন বিচারক। এবার শেখ সমীরকেও একই সাজা শোনাল আদালত। সরকারি আইনজীবী জানান, শেখ সমীর পাক জঙ্গি সংগঠন লস্কর ই তইবার সক্রিয় সদস্য। তার বাড়ি মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদে। পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার সে। ২০০৫ সালে সে সৌদি আরবেও গিয়েছিল। সেখানেই তার সঙ্গে লস্কর এজেন্টের পরিচয় হয় বলে তদন্তকারীরা জানতে পারে।

এরপর পাকিস্তানে গিয়ে সমীর জঙ্গি প্রশিক্ষণও নিয়েছিল বলে তদন্তে প্রকাশ। সেখান থেকে ভারতে প্রবেশ করার চেষ্টা করে সে। কিন্তু কাশ্মীর সীমান্তে কড়াকড়ি থাকায় বাংলাদেশের ঢাকায় চলে যায় সে। মতিঝিলে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে সঙ্গীদের সঙ্গে ছিল সমীর। তারপর সীমান্ত পেরিয়ে সে চলে আসে বনগাঁয়। সেখানে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে গা ঢাকা দিয়েছিল তারা। বিএসএফ তাদের ওই বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।

২০১২ সাল থেকে মহকুমা আদালতে মামলা শুরু হয়। এই মামলা চলাকীলান ২০১৪ সালে তাকে অন্য একটি মামলায় মুম্বইয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তখন চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায় সমীর। এরপর ২০১৭ সালে দিল্লির পাতিয়ালা থেকে এনআইএ তাকে গ্রেফতার করে। সেখান থেকেই বনগাঁয় আনা হয় শেখ সমীরকে।

মঙ্গলবার বিচারক বিনয়কুমার পাঠন তাকে দোষীসাব্যস্ত করেন। বৃহস্পতিবার তার সাজা ঘোষণার কথা ছিল। কিন্তু নিরাপত্তার অভাবে তা স্থগিত রাখা হয়। শনিবার ফের নিরাপত্তার বজ্র আঁটুনিতে গোটা আদালত চত্বরকে ঘিরে ফেলে শেখ সমীরের মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা করা হয়। সমীরের বিরুদ্ধে হয়দরাবাদে বিস্ফোরণ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হত্যার ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক মামলা ছিল।