সুন্দরী স্ত্রীর হাতে এক এক করে খুন ২ স্বামী! ১৪ বছর আগের ঘটনা যেন থ্রিলার


খড়দহ হত্যাকাণ্ডে পরতে পরতে থ্রিলার। তদন্তে নেমে তদন্তকারীদের হাতে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। যা যে কোনও সিনেমার থ্রিলারকে অবলীলায় হার মানাতে পারে। একে একে দুই স্বামীকে নিজের হাতেই সরিয়ে দিয়েছেন স্ত্রী, এমনকী প্রথম স্বামীর পরিবারের চার সদস্যের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পিছনেও তাঁর হাত রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

পুলিশে তদন্তে উঠে এসেছে, অদিতি চেয়েছিল তৃতীয় বিয়ে করতে। সেখানেই বাধ সেধেছিল দ্বিতীয় স্বামী প্রতুল। আর তারই জেরে তাঁকে দুনিয়া থেকে সরে যেতে হয়। প্রথম বিয়েতে স্বামীর অস্বাভাবিক মৃত্যু। দ্বিতীয় বিয়েতে বিচ্ছেদের পরই প্রাক্তন স্বামীর রহস্য মৃত্যু। ক্রমেই দ্বিতীয় স্বামী প্রতুল চক্রবর্তীর খুনের তদন্তে সামনে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। কেঁচো খুড়তে গিয়ে বেরিয়ে পড়ে কেউটে।

একটা খুনের কিনারা করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে ১৪ বছর আগে ঘটে যাওয়া আর একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা। একই সঙ্গে বারাসতের চারজনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল। আর সেই ঘটনার পিছনে প্রতুল হত্যাকাণ্ডে জড়িত স্ত্রী অদিতির হাত রয়েছে বলেই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। পুনরায় এই মামলা উত্থাপন করা হয়েছে।

তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন ২০০৪ সালে অদিতির প্রথম স্বামী বারাসতের জয়দীপ বিশ্বাসের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। কিছুদিন পর জয়দীপের মা, পিসি ও পিসেমশাইয়েরও মৃত্যু হয় অস্বাভাবিক ভাবে। এরপরই অদিতি বাড়ি বিক্রি করে অন্যত্র চলে যান। জয়দীপের চাকরিটিও পান অদিতি।

প্রতিবেশীদের অভিযোগ ছিল, জয়দীপের মৃত্যু স্বাভাবিক নয়, তাঁর দেহ নীল হয়ে গিয়েছিল। পরিবারের অন্য তিনজনের মৃত্যুও অস্বাভাবিক। কিন্তু সেই মামলা বেশিদূর এগোয়নি। এরই মধ্যে অদিতি বিয়ে করে প্রতুলকে। প্রতুলের সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে যায় কিছুদিন আগে। এরপর ম্যাট্রিমনিয়ার সাইটে নিজের অ্যাকাউন্ট খুলে বিয়ের জন্য কথাবর্তা এগোতে শুরু করে।

বেসরকারি সংস্থার কর্মী কলকাতারই এক যুবকের সঙ্গে সম্প্রতি ঘনিষ্ঠতাও বাড়ে অদিতির। সেই সম্পর্কেই বাধ সাধে প্রতুল। তারই জেরে প্রতুলকে খুন হতে হয় বলে তদন্তকারীরা মনে করছেন। কারণ তাঁদের হাতে যে তথ্য-প্রমাণ উঠে এসেছে এবং অদিতি যেভাবে বয়ান বদল করেছে, তাতেই এটাই স্পষ্ট।

প্রথমে অদিতি জানিয়েছিল, তাকে প্রতুল খুন করতে চেয়েছিল। তাই নিজেকে বাঁচাতে প্রতুলকে খুন করেছি। এখন অদিতি জানাচ্ছে, সে পরিক্লপান করেই প্রতুলকে খুন করেছে। প্রথমে মদ্যপান করান অদিতি। তারপর বালিশ চাপা দিয়ে তাঁকে খুন করা হয়। এই ঘটনায় তৃতীয় কোনও ব্যক্তির যোগ নেই বলে জানিয়েছে অদিতি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০ ডিসেম্বর শান্তিনগরের খালপাড় থেকে প্রতুল চক্রবর্তীর দেহ উদ্ধাররের পর একটি রুমালই ধরিয়ে দেয় স্ত্রী অদিতিকে।