"মা তুমি নিয়ে যাও, নাহলে আত্মহত্যা করব"; আর্তি দুবাইয়ে বন্দী যুবকের


বহরমপুর : কাজ দেওয়ার নাম করে মুর্শিদাবাদের দুই যুবককে জোর করে দুবাইতে আটকে রাখার অভিযোগ উঠল দালাল চক্রের বিরুদ্ধে। একজনের নাম সন্তু দাস। তার বাড়ি সালার থানার কাটুন্দি গ্রামে। ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে জেলা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছেন সন্তুর মা-বাবা।

বছর ২০-র সন্তু মাধ্যমিক পাশ করার পর স্কুলে ভরতি হলেও পরে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়। তারপর থেকে কাজের সন্ধানে ছিল। ইতিমধ্যে এক দালাল চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে। দালালরা সন্তুকে দুবাইতে কাজের প্রতিশ্রুতি দেয়। তারপর সন্তু সহ মুর্শিদাবাদের পাঁচজনকে মুম্বই নিয়ে যাওয়া হয়। তারা হল- হরিহর বায়েন, মিরাজ মির্জা, মহম্মদ কুতুবউদ্দিন, মহম্মদ আসগর আলম। সেখান থেকে ২ ডিসেম্বর রাতে বিমানে করে পাঁচজনকে দুবাইয়ে পাঠানো হয়। অভিযোগ, দুবাই পৌঁছনোর পর সন্তু সহ আরও এক যুবকের ভিসা কেড়ে নেওয়া হয়। চারদিন রাস্তায় ফেলে রাখা হয়। তারপর একটি ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। বলা হয়, কাজ করতে যেতে। কিন্তু, কাজ করতে যেতে অস্বীকার করে সন্তু। তখন থেকেই তাকে সেই ঘরে আটকে রাখা হয়েছে।

সন্তুর মা অঞ্জলি দাস বলেন, "প্রথম চারদিন কিছু খেতে পারেনি। পরে ছেলেকে বলে কাজ করতে যেতে। কিন্তু, ছেলে বলে এরকম কষ্টের মধ্যে যেতে পারব না, এখানে থাকতে পারব না। তারপর থেকে ঘরে বন্দী করে রাখা হয়েছে। দু'বেলা একমুঠো করে ভাত দেয়। ছেলে খুব কান্নাকাটি করছে। বাড়ি ফিরে আসার জন্য অস্থির হয়ে যাচ্ছে। বলছে, মা তুমি নিয়ে যাও। নাহলে আমি ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করব।"

ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে দালাল সংস্থার দ্বারস্থ হন সন্তুর মা-বাবা। তাঁদের অভিযোগ, "ছেলেকে ফিরিয়ে আনার জন্য ১০ হাজার টাকা নেয় তারা। কিন্তু, ছেলেকে আনা হয়নি।" তারপর বাধ্য হয়ে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপারের কাছে যান সন্তুর মা-বাবা। সন্তুকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার। তিনি বলেন, "দুবাইতে ভারতীয় দূতাবাস মারফত যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে।"