জমি বেচে ক্রিকেট মাঠ তৈরি করেছিলেন বাবা, জাতীয় দলে ডাক পেয়ে প্রতিদান মেয়ের


বাপ কি বেটি… বোধ হয় একেই বলে। স্বপ্ন দেখেছিলেন বাবা। মেয়েকে ক্রিকেটার বানাবেন। আর সেই স্বপ্ন সফল করার জন্য নিজের শেষ সম্বল বিক্রি করে তৈরি করে দিয়েছিলেন ক্রিকেট মাঠ। আশা ছিল, তাঁর কষ্টার্জিত পরিশ্রমের টাকায় তৈরি মাঠে অনুশীলন করে একদিন জাতীয় দলে ঠিকই সুযোগ পাবে মেয়ে। হতাশ করেননি ২২ বছরের তরুণী। কথা হচ্ছে জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের নবতম তারকা প্রিয়া পুনিয়ার।

অভিনব বিন্দ্রার বাবা ছেলের জন্য তৈরি করেছিলেন শুটিং রেঞ্জ। সেখানে অনুশীলন করেই দেশকে অলিম্পিকের স্বর্ণ পদক এনে দেন অভিনব। আর প্রিয়া পুনিয়ার বাবা মেয়ের জন্য বানিয়েছিলেন ক্রিকেট মাঠ। জয়পুরের তরুণী এবার সুযোগ পেলেন জাতীয় দলে। বলছেন, আগামিদিনে বাবার স্বপ্ন সফল করাই তাঁর লক্ষ্য। এমন কিছু করতে চান যাতে তাঁর বাবা গর্ববোধ করেন। সদ্য নিউজিল্যান্ড সফরের জন্য ভারতের জাতীয় দল ঘোষিত হয়েছে। আর টি-২০ দলে সুযোগ করে নিয়েছেন প্রিয়া।

ছোটবেলায় প্রিয়ার বাবা সুরেন্দ্র চেয়েছিলেন মেয়ে ব্যাডমিন্টন খেলুক। কিন্তু একটু বড় হতেই তিনি বুঝতে পারেন প্রিয়ার ব্যাডমিন্টনে কোনও আগ্রহ নেই, তাঁর ধ্যানজ্ঞান সব ক্রিকেটে। ২০১০ সালে জয়পুরের একটি ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে তাঁকে ভরতি করার সিদ্ধান্ত নেন সুরেন্দ্র। কিন্তু, মেয়ে হওয়ায় ওই অ্যাকাডেমিতে প্রিয়াকে ভরতি নেওয়া হয়নি। বরং অপমান করা হয়। এরপরই সুরেন্দ্র সিদ্ধান্ত নেন মেয়ের অনুশীলনের জন্য যা যা প্রয়োজন সব তিনি তৈরি করে দেবেন। কিন্তু সরকারি চাকুরে সুরেন্দ্রর পক্ষেও আস্ত একটা ক্রিকেট মাঠ তৈরি করা সম্ভব ছিল না। তাই জয়পুরের কাছে নিজের দেড় বিঘা জমি বিক্রি করে দেন তিনি। সেসময় দাম পেয়েছিলেন ২২ লক্ষ টাকা। সেই টাকা দিয়েই তৈরি করেন ক্রিকেট মাঠ। প্রতি মাসে মাঠ সংরক্ষণের জন্য খরচ হত ১৫ হাজার টাকা। সংসারের খরচ সামলে সেই টাকাটাও জোগাড় করতেন সুরেন্দ্রবাবু। আজ মেয়ের কীর্তিতে সত্যিই গর্বিত তিনি।