ভোটের আগে পরীক্ষা ডিএম-দের, পাশ না করলে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব নয়


ভোটের আগে এ বার পরীক্ষা দিতে হবে রাজ্যের সব জেলাশাসকে। সেই পরীক্ষায় কৃতকার্য না হলে তাঁকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হবে। এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

পাঁচ রাজ্যের সেমিফাইনালের আগে থেকেই এ রাজ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে ২০১৯-এর ফাইনালের জোর কদমে প্রস্তুতি। কারণ এই প্রথম সারা দেশে এম-৩ ইভিএমে নির্বাচন হবে।

রাজ্যের মু্খ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর সূত্রে খবর, সেপ্টেম্বর মাস থেকেই কয়েক দফায় রাজ্য পুলিশের সশস্ত্র প্রহরায় নিয়ে আসা হয়েছে নতুন এই ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট। নির্বাচন দফতর জানাচ্ছে, ২০১৯ সালে লোকসভা ভোট দেবেন এ রাজ্যের প্রায় ৬ কোটি ৮০ লাখ ভোটার। বুথের সংখ্যা ৭৮ হাজার ৭৯৯।

সমস্ত বুথেই থাকবে নতুন এম-৩ যন্ত্র। রাজ্য নির্বাচন দফতরের কাছে থাকা অধিকাংশ ইভিএমই ১৫ বছরের বেশি পুরনো। সেই কারণে ওই যন্ত্রগুলি বাতিল হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। মাত্র ২৬ হাজার নতুন ইভিএম থাকলেও তা দিয়ে নির্বাচন করানো সম্ভব নয়। তাই সমস্ত মেশিনই বাতিল করে হায়দরাবাদের ইলেক্ট্রনিক্স কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড (ইসিআইএল)-এর দফতর থেকে কয়েক দফায় নিয়ে আসা হয়েছে প্রায় তিন লাখ নতুন যন্ত্র। এর মধ্যে ১ লাখ ৩৫০টি কন্ট্রোল ইউনিট, ১ লাখ ১০ হাজার ৭০০টি ব্যালট ইউনিট এবং ১ লাখ ৩ হাজার ৫০০টি ভিভিপ্যাট। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা সদরে স্ট্রংরুমে রাখা রয়েছে সেই নতুন ভোটগ্রহণ যন্ত্র। সাধারণ ভাবে স্ট্রংরুমের নিরাপত্তার জন্য চার জন করে নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগের কথা থাকলেও এ বার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর এক সেকশন অর্থাৎ ৮ জন করে নিরাপত্তাকর্মী চেয়েছেন পাহারার জন্য।

নতুন এই এম-৩ মেশিন ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণও শুরু হয়ে গিয়েছে জোরকদমে। তার মধ্যেই নয়া নির্দেশ জারি করেছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। সূত্রের খবর, মধ্যপ্রদেশে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা হতে দেরি হওয়ার পেছনে রয়েছে আধিকারিকদের অনভিজ্ঞতা এবং নির্বাচনী আইন ও নিয়ম সম্পর্কে পুরোপুরি অবহিত না থাকা। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই ভোটকর্মী এবং রিটার্নিং অফিসারের প্রশিক্ষণ এবং তার মূল্যায়নের উপর জোর দেওয়া হয়েছে।

প্রতিটি রাজ্যেই সাধারণত জেলাশাসকরাই রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। নতুন এই নির্দেশে বেনজির ভাবে বলা হয়েছে যে, সমস্ত রিটার্নিং অফিসারদের প্রশিক্ষণের পর তাঁদের পরীক্ষা নেবে নির্বাচন কমিশন। সেই পরীক্ষায় মূলত গুরুত্ব দেওয়া হবে নির্বাচনী আইন এবং নিয়মে। সেই পরীক্ষায় যে জেলাশাসকরা উত্তীর্ণ হতে পারবেন না, তাঁদের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব থেকে অর্থাৎ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হবে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, "নতুন মেশিনে কারচুপি করা অসম্ভব। সে ভাবেই বানানো হয়েছে এই নয়া এম-৩ মেশিন। তার পরেও যাতে কোনও অভিযোগ না ওঠে, সে কারণেই অতিরিক্ত সতর্কতা। মেশিনের ট্রায়াল এবং কর্মীদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তাই রিটার্নিং অফিসারের দক্ষতাও মেপে নেওয়া হবে।"