জালে বড় পাচারচক্র, তিন শহর থেকে উদ্ধার ২১ কোটির সোনা


কলকাতা: কলকাতা ও শিলিগুড়িকে 'ভরকেন্দ্র' বানিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সোনা পাচারের এক বড়সড় চক্রকে পাকড়াও করল অর্থমন্ত্রকের রাজস্ব গোয়েন্দা দপ্তর (ডিআরআই)। কলকাতা, শিলিগুড়ি এবং উত্তরপ্রদেশের লখনউতে গত বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবারের এই অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে ৬৬ কেজি সোনা। যার অর্থমূল্য প্রায় ২১ কোটি টাকা। সোনা পাচার চক্রের চার চাঁইকে গ্রেপ্তার করেছে ডিআরআই। একইসঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে সোনা পাচারের জন্য তৈরি বিশেষ প্রকোষ্ঠ সহ চারটি গাড়িও। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত গোটা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হানা দিয়ে ২.৬৩ টন চোরাই সোনা উদ্ধার করেছে শুল্ক বিভাগ। এর আগে ২০১৭-'১৮ আর্থিক বছরে শুল্ক বিভাগ ৩.২২ টন চোরাই সোনা উদ্ধার করেছিল। যা ছিল ২০১৬-'১৭ আর্থিক বছরের তুলনায় ১০৩ শতাংশ বেশি।

গোপন সূত্রে ডিআরআই খবর পায়, বিদেশ থেকে সোনা এনে তা ভুটান হয়ে এ রাজ্যে নিয়ে এসেছে চোরাচালানকারীরা। সেই সোনা দেশের বিভিন্ন অংশে পাঠানোর কাজও শুরু হয়েছে। সেই খবরের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে চোরাচালানকারীদের পিছু ধাওয়া করে একটি গাড়িকে আটক করেন ডিআরআই-এর গোয়েন্দারা। তল্লাশি চালিয়ে গাড়ির চালকের সিটের নীচে একটি প্রকোষ্ঠ থেকে উদ্ধার করা হয় ৩৩টি সোনার বার। যার প্রতিটির ওজন এক কেজি। গাড়ির দুই আরোহীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে একজন এই স্মাগলিং সিন্ডিকেটের অন্যতম নিয়ন্ত্রক।

ডিআরআই সূত্রে জানা গিয়েছে, লখনউয়ে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কলকাতায় এই চক্রের সোনা পাচার সম্পর্কে নির্দিষ্ট তথ্য মেলে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে গত শুক্রবার ভোরে কলকাতার উপকণ্ঠে দুই আরোহী সহ একটি গাড়িকে আটক করা হয়। তল্লাশি চালিয়ে ওই গাড়ি থেকেও মেলে ৩৩টি সোনার বার। সেগুলির প্রতিটির ওজন প্রায় এক কেজি করে। সোনার বারগুলি গাড়ির ড্যাশবোর্ডের পিছনে এবং গিয়ার বক্সে বিশেষ ভাবে তৈরি প্রকোষ্ঠের ভিতরে রাখা ছিল।

শুক্রবারই শিলিগুড়ির এক ডেরায় হানা দেন ডিআরআই গোয়েন্দারা। সেই ডেরা থেকে উদ্ধার করা হয় আরও দুটি গাড়ি। সেই গাড়ি দুটিতেও বিশেষভাবে তৈরি প্রকোষ্ঠ রয়েছে। শিলিগুড়ির ওই ডেরা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে নগদ সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। ডিআরআই গোয়েন্দারা বলছেন, এই ডেরা থেকে উদ্ধার হওয়া গাড়িগুলি আগেও সোনা পাচারের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।