রথযাত্রা নিয়ে ফের জট, হতাশ বিজেপি


তাদের প্রস্তাবিত রথযাত্রা কর্মসূচি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে দৃশ্যত বিপর্যস্ত বিজেপি শিবির।
কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বৃহস্পতিবারের রায় শুনে উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছিল তাদের মধ্যে। জাতীয় গ্রন্থাগারের প্রেক্ষাগৃহে বৈঠক চলাকালীন ওই রায়ের খবর আসায় মিষ্টি বিতরণও হয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে। রাতে দল সিদ্ধান্ত নেয় শনিবার বীরভূমের তারাপীঠ থেকে রথের চাকা গড়ানো হবে। তার সূচনায় রামপুরহাটের রেলের মাঠে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সভার উদ্যোগও শুরু হয় রাত থেকেই। শুক্রবারই বীরভূম রওনা হওয়ার জন্য দলের অনেক নেতা এ দিন ব্যাগ গুছিয়ে হাজির হয়েছিলেন রাজ্যের সদর দফতরে। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চের রায় শোনার পর ব্যাগ সমেত বীরভূমের বদলে তাঁরা রওনা হন বেলেঘাটা অঞ্চলের একটি কার্যালয়ের উদ্দেশে। পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করার জন্য সেখানে বৈঠকে বসেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সহ পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন-সহ দলীয় নেতৃত্ব।

যদিও রায় শোনার পরেই দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা রাখতে দিলীপবাবু জানিয়ে দেন, ''আদালতের রায় আমরা মানব। কিন্তু শনিবার বীরভূমে সভা হবেই। আমি যাব। আইন অমান্য আন্দোলনও যেমন চলছে, চলবে। পরে জেলায় জেলায় কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীদের সভাও হবে। যাত্রাও বন্ধ হচ্ছে না। যত দ্রুত সম্ভব আমরা বার করব।'' একইসঙ্গে দিলীপবাবু বলেন, ''সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পরেই তা ঠিক হবে।'' যদিও রাহুলবাবু বলেন, ''ডিভিশন বেঞ্চের এই রায় গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে। আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাব।''

বিজেপির প্রস্তাবিত রথযাত্রা নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের রায় শুনে প্রথমে মন্তব্য করতে না চাইলেও শেষ পর্যন্ত কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ''কভি খুশি, কভি গম!'' বিজেপি তাদের রথযাত্রাকে 'গণতন্ত্র বাঁচাও' যাত্রা নাম দিয়ে নিছক রাজনৈতিক কর্মসূচি বলে দাবি করেছে। কিন্তু অন্য রাজনৈতিক দলগুলি  মোটেই বিনা প্রশ্নে বিজেপির ওই দাবি মানতে রাজি নয়। যেমন— কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং অধুনা ন্যাশনাল কনফারেন্সের সাংসদ ফারুক আবদুল্লা এ দিন কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানের ফাঁকে বলেন, ''ভারতের রাজনীতি এবং সমাজে বিভাজনটাকে বিজেপি একটা অন্য পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে রথযাত্রা করার কী দরকার? ওরা রথ বার করে বার্তা দিতে চাইছে, এখানে সংখ্যাগুরু হয়েও হিন্দুরা বিপন্ন। তা হলে কাশ্মীরেও তো সংখ্যাগুরু মুসলিমরা কোরান নিয়ে যাত্রা বার করতে পারে! সেটা তো রাজনীতিতে চলে না।''