আইপিএলে বিরাটের দলে বাংলার কিশোর


জয়পুর: বিরাটের সঙ্গে সেলফি তোলা বা ক্যাপ্টেন কোহলির অটোগ্রাফ নেওয়ার বয়স প্রয়াস রায় বর্মনের৷ কিন্তু বাংলার এই কিশোর সরাসরি ঢুকে পড়ল আইপিএল বিরাটদের ড্রেসিংরুমে৷ কারণ মঙ্গলবার দ্বাদশ আইপিএল নিলামে ১৬ বছরের বাংলার লেগ-স্পিনারকে ১.৫ কোটি দিয়ে কিনল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর৷

চলতি বছরেই বাংলার হয়ে লিস্ট-এ ম্যাচে অভিষেক হয়েছে প্রয়াসের৷ বাংলার হয়ে বিজয় হাজারে ট্রফিতে সর্বাধিক উইকেট নিয়ে নজর কেড়েছে বছর ষোলোর এই লেগ-স্পিনার৷ ২০ লক্ষ টাকা নূন্যতম মূল্যে নিলামে ওঠা প্রয়াসকে আরসিবি কিনেছে এক কোটি ৫০ লক্ষ টাকা খরচ করে৷ ২০১৯ আইপিএল প্রয়াসই কনিষ্ট ক্রিকেটার৷ এছাড়াও নিলামে আরসিবি কিনেচে ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান সিমরন হেটমাইয়ার, গুরুকীরত সিং, শিভম দুবে এবং দেবদ্রুত পাদিক্কলকে কিনেছে রয়্যাল চ্যালে়ঞ্জার্স৷

বিরাটের দলে সুযোগ পাওয়ার পর প্রয়াস জানায়, 'এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না৷ ভাবিনি আইপিএলে কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি আমাকে কিনবে৷ অন্য কিশোরদের মতোই বিরাটও আমার রোল মডেল৷ বিরাটের সঙ্গে ফটো তোলা আমার স্বপ্ন৷ আমি অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু সম্ভব হয়নি৷ এবার আমার হিরোর সঙ্গে ড্রেসিংরুম শেয়ার করব, এটা বিশ্বাস হচ্ছে না৷ বিরাট, এবি ডি'ভিলিয়ার্সদের সঙ্গে দিনের পর দিন প্র্যাকটিস, ড্রেসিংরুম শেয়ার করা হবে আমার কাছে শিক্ষণীয় বিষয়৷'

লম্বায় ইতিমধ্যেই ছ' ফুট ছাপিয়ে গিয়েছে প্রয়াস৷ অজি কিংবদন্তি লেগ-স্পিনার শেন ওয়ার্নের ভক্ত বল এতটা ঘোরাতে পারে না৷ কিন্তু নিখুঁত লেন্থ ও গতির জন্য ময়দানে অনেকেই তাকে কুম্বলে বলে ডাকে৷ চলতি বছর জম্মু-কাশ্মীরের বিরুদ্ধে বাংলার হয়ে লিস্ট-এ ম্যাচে অভিষেক হয় প্রয়াসের৷ প্রথম ম্যাচেই মাত্র ২০ রান দিয়ে ৪টি উইকেট নিয়ে সাড়া ফেলে দেয় বাংলার এই লেগ-স্পিনার৷ টুর্নামেন্টে ৯ ম্যাচে মোট ১১টি উইকেট নেয় প্রয়াস৷ ইকনোমি রেট ৪.৪৫৷

বিজয় হাজারে ট্রফিতে দারুণ সফল হলেও চলতি বছরে রঞ্জি ট্রফিতে বাংলা দয়ে সুযোগ হয়নি বাংলার এই লেগ-স্পিনারের৷ এ নিয়ে প্রয়াসের বক্তব্য, 'রঞ্জি ট্রফির ডিফারেন্ট বল গেম৷ রঞ্জি খেলার জন্য আমাকে অনেক পথ যেতে হবে৷ আমি সবে মাত্র ১৬ বছরের৷ ক্যাম্পেন্ট মনোজ তিওয়ারি ও কোচ সাইরাজ বাহুতুলের কাছে অনেক কিছু শিখতে চাই৷'

প্রয়াসের বাবা ডক্টর কৌশিক রায় বর্মন সবসময় ছেলেকে সার্পোট করে গিয়েছেন৷ প্রয়াস বলে, 'বাবা সবসময় আমাকে করত৷ পড়াশোনার জন্য একদিনও জোড় করেননি৷ আমার দিদি একজন আইটি প্রফেশনাল৷ কিন্তু আমি ক্রিকেটকেই বেছে নিয়েছি৷ এবার ব্যাঙ্গালোর গিয়ে দিদির কাছে থাকতে পারব৷'

আইপিএলের খ্যাতি তার মাথা ঘুরিয়ে দেবে না তো! এই উত্তরে প্রয়াস জানায়, 'জীবন এতটুকু বদলে যায়নি৷ এটা আমার কাছে শুরু৷ আমি এখন শিখতে চাই৷' আইপিএল নিলামে দল পাওয়ার পর প্রথম খবরটা বাবার কাছ থেকে পেয়েছে প্রয়াস৷ দিল্লিতে বাবার কাছে বড় হওয়া প্রয়াস দক্ষিণ দিল্লির রাম পাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ভর্তি হয়েছিল৷ কিন্তু সেথান থেকে দূর্গাপুরে চলে আসে প্রয়াস৷ সেখান থেকে অনুর্ধ্ব-১৪ টুর্নামেন্ট অম্বর রায় সাব-জুনিয়রে খেলে অনূর্ধ্ব-১৬ বসে সুযোগ পায়৷