সোহরাবুদ্দিন শেখ মামলায় ২২ জন বেকসুর খালাস


১৩ বছর আগে কুখ্যাত গ্যাংস্টার সোহরাবুদ্দিন শেখ এবং তার ডানহাত তুলসিরাম প্রজাপতি কোনও ভুয়ো এনকাউন্টারে মারা গিয়েছিল কি না তা নিয়ে যে মামলা চলছিল মুম্বই আদালতে। সেই মামলায় অভিযুক্ত ২২ জনকে বেকসুর খালাস করে দিল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। এই ঘটনায় রাজস্থান, গুজরাট ও অন্যান্য অঞ্চলের অফিসার মিলিয়ে মোট ২২ জন পুলিস অফিসার অভিযুক্ত। এই ঘটনার তদন্তের দায়িত্বে থাকা সিবিআই জানিয়েছে, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ফায়দার জন্যই এই ভুয়ো এনকাউন্টারের ছক কষা হয়েছিল। প্রথমে অভিযুক্তের তালিকায় নাম ছিল অমিত শাহ সহ মোট ৩৮ জনের। প্রমাণের অভাবে তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিতে হয়।
২০০৫ সালের নভেম্বর মাসে গুজরাট পুলিস জানায়, গ্যাংস্টার সোহরাবুদ্দিন শেখ একটি এনকাউন্টারে প্রাণ হারিয়েছে। সোহরাবুদ্দিনের সঙ্গে লস্কর–ই–তৈবার যোগ ছিল বলে অভিযোগ। গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে হত্যার চক্রান্তের অভিযোগও ছিল তার বিরুদ্ধে। সিবিআই জানিয়েছে, হায়দরাবাদ থেকে বাসে করে মহারাষ্ট্রের সাঙ্গলিতে আসছিল সোহরাবুদ্দিন শেখ, তুলসিরাম প্রজাপতি ও সোহরাবুদ্দিনের স্ত্রী কৌসর বাঈ। সেই সময়ই বাস থেকে তাদের অপহরণ করে গুজরাট পুলিস।

চারদিন বাদে আহমেদাবাদের কাছে একটি জায়গায় সোহরাবুদ্দিনকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে সিবিআই। তারা আরও জানায় যে, সোহরাবুদ্দিনের স্ত্রী কৌসর বাঈকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছিল। গুজরাট–রাজস্থান সীমান্তের কাছে চাপড়িতে গুলি করে হত্যা করা হয় তুলসিরাম প্রজাপতিকে। পুলিস জানিয়েছিল, আদালতে শুনানি চলার পর তুলসিরামকে আহমেদাবাদ থেকে যখন রাজস্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সেই সময় সে পালানোর চেষ্টা করে। তখনই তাকে গুলি করা হয়।

এই মামলায় আর যাঁরা ছাড়া পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন–গুজরাটের পুলিস কর্তা অভয় চুদাসামা, রাজস্থানের প্রাক্তন পুলিসমন্ত্রী গুলাবচাঁদ কাটারিয়া, গুজরাটের প্রাক্তন পুলিস প্রধান পি সি পান্ডে এবং পদস্থ পুলিসকর্তা গীতা জোহরি। মূল ঘটনার পাঁচ বছর বাদে ২০১০ সালে এই মামলা সিবিআইয়ের হাতে আসে।

২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিচারপর্ব গুজরাট থেকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মুম্বইতে স্থানান্তরিত হয়। এই মামলার অন্যতম সাক্ষী আজম খান বলেন, সোহরাবুদ্দিন ও তুলসিরাম প্রজাপতি দু'‌জনে মিলে বহু অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল। তার মধ্যে একটি হল ২০০৩ সালের মার্চ মাসে রাজ্যের প্রাক্তন পুলিসমন্ত্রী হরেন পান্ডিয়ার হত্যাকাণ্ড।