যে কোনও কম্পিউটারে চালানো যাবে নজরদারি, নয়া নির্দেশিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের


দেশের  যে কোনও প্রান্তে, যে কোনও সময়, যে কোনও কম্পিউটারে নজরদারি চালাতে পারবে ১০ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যে ১০টি তদন্তকারী সংস্থাকে এই নজরদারি চালানোর ক্ষমতা দেওয়া হল, তার মধ্যে আছে ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) এবং রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (র)। বৃহস্পতিবারই এই নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে বিপজ্জনক বলে টুইটারে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কেন্দ্রীয় নজরদারির প্রতিবাদ করেছেন সিপিএম সাংসদ সীতারাম ইয়েচুরিও।

আইবি এবং র ছাড়া আর যে কটি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে এই ক্ষমতা দেওয়া হল, তার মধ্যে আছে নারকোটিকস কন্ট্রোল বোর্ড, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি), সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডিরেক্ট ট্যাক্সেস, ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স, সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই), ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ),  দিল্লি কমিশনার অব পুলিশ এবং ডিরেক্টরেট অব সিগনাল ইন্টেলিজেন্স।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে এই নির্দেশিকা জারি করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব রাজীব গওবা। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে যে কোনও কম্পিউটারে নজরদারি চালানোর ক্ষমতা পেল এই দশ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এই নির্দেশিকা জারি হওয়ার আগে পর্যন্ত মোবাইল কল বা ইমেল-এর মাধ্যমে যে ডেটা বা তথ্য এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেত, তার ওপর নজরদারি চালানোর ক্ষমতা ছিল তদন্তকারী সংস্থাগুলির। কিন্তু এখন থেকে মোবাইল কল বা ই-মেলের পাশাপাশি বিভিন্ন কম্পিউটারের তথ্য খতিয়ে দেখার ক্ষমতা পেল এই সব তদন্তকারী সংস্থা । প্রয়োজনে বাজেয়াপ্ত করা যাবে যে কোনও কম্পিউটার বা যন্ত্র। শুধু তাই নয়, যে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা এখন থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তাঁর বা তাদের কম্পিউটারের তথ্য দেখাতে বাধ্য। অন্যথায় জরিমানা অথবা সাত বছরের কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে হবে ।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, 'ভারতের সার্বভৌমত্ব, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা এবং বন্ধু দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্কের স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত'।

যদিও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির হাতে এই পরিমাণ ক্ষমতা তুলে দেওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন অনেকেই।তাঁরা মনে করছেন ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের ঘটনা বাড়তে পারে এই নির্দেশ জারি হওয়ার পর। টুইট করে সাধারণ মানুষের ওপর এই কেন্দ্রীয় নজরদারির ঘটনাকে বিপজ্জনক বলে মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নিয়ে আমজনতার মতও জানতে চেয়েছেন তিনি। 

সিপিএম সাংসদ সীতারাম ইয়েচুরির মন্তব্য, ''প্রত্যেক ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে অপরাধীর মতো ব্যবহার করা হচ্ছে। নাগরিকদের ওপর এই নজরদারি অসাংবিধানিক।''

ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।