পদ্মাপারে ভোট: রক্তাক্ত বিরোধীরা, সেনার ভূমিকায় প্রশ্ন, অভিযুক্ত হাসিনার দল


ঢাকা: রক্তাক্ত হচ্ছে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন। রাজপথে হামলা, ধরপাকড় সবমিলে চরম উত্তেজনায় ফুটতে শুরু করেছে পদ্মাপারের ভোট পর্ব।

মঙ্গলবার প্রকাশ্যেই ফেলে পিটিয়ে মারা হয়েছে ঢাকার কেরানীগঞ্জে বিএনপির অন্যতম নেতা তথা সংখ্যালঘু প্রাক্তন মন্ত্রী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে। রক্তাক্ত অবস্থায় পরে তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করেন। বুধবার সকালে গয়েশ্বরবাবুর সঙ্গে দেখা করে সৌজন্য বিনিময় করেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী তথা আওয়ামী লীগ প্রার্থী নাসরুল হামিদ। দুজনেই লড়াই করছেন ঢাকা-৩ আসনে।

আশংকা সত্যি হচ্ছে। নির্বাচন যে রক্তাক্ত আকার নিতে চলেছে তার প্রমাণ মিলতে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক মহল আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে। তাতেই লাগছে রক্তের ছিটে। শাসক-বিরোধী দু-পক্ষই আক্রান্ত। তবে হামলার নিরিখে বেশি রক্তাক্ত বিরোধীরা।

দুই পক্ষের অভিযোগ পরস্পরের প্রতি। এদিকে বিরোধী জোটের দাবি, নির্বাচন কমিশন নিঃস্পৃহ হয়ে বসে রয়েছে। শুধু তাই নয়, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ভোট করার জন্য সেনাবাহিনী নামানো হলেও তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

৩০ জানুয়ারি একাদশ তম জাতীয় নির্বাচন। তার আগেই চূড়ান্ত পর্বের ভোট প্রচারে হামলা পাল্টা হামলায় বাংলাদেশ উত্তপ্ত। ঢাকা সহ বিভিন্ন এলাকায় চলছে হিংসাত্মক পরিবেশে প্রচার। অভিযোগ, বিরোধী বিএনপি ও তাদের সম্মিলিত জোট ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা আক্রান্ত-রক্তাক্ত। কিছুক্ষেত্রে এসেছে শাসক আওয়ামী লীগের উপর হামলার অভিযোগও।

খোদ রাজধানী ঢাকা শহরে আক্রান্ত হয়েছেন সাংবাদিকরা। একাধিক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। পরিবেশ শান্তিপূর্ণ তা আর জোর গলায় বলতে পারছে না নির্বাচন কমিশন। শুধু ঢাকা নয়, চট্টগ্রাম, যশোর, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, সিলেট, ময়মনসিংহ সহ সর্বত্র চলছে বিক্ষিপ্ত হিংসা।

এই অবস্থায় নির্বাচন কতটা সুষ্ঠুভাবে হবে তার কোনও উত্তর নেই। এমনই পরিস্থিতিতে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে তুমুল উত্তাপ ছড়াল। এই ফ্রন্টের প্রধান ড. কামাল হোসেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা ভদ্র আচরণ না করার অভিযোগ তুলে সভাও বর্জন করে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের দাবি, পরাজয় নিশ্চিত জেনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ছুতো খুঁজছে বিএনপি। পরিস্থিতি উত্তপ্ত ও রক্তাক্ত হচ্ছে পদ্মাপারের ভোটে। ৩০০টি আসনের দখল নিতে আগামী ৩০ ডিসেম্বর ঝাঁপিয়ে পড়ছে হাসিনা-খালেদার দল।