শিল্পসংস্থায় ৭০ শতাংশ কর্মী মধ্যপ্রদেশের হলে মিলবে ইনসেনটিভ, চমক কমলনাথের


ভোপাল : কোনও শিল্পসংস্থায় যদি ৭০ শতাংশ কর্মী মধ্যপ্রদেশের হয়, তবে সেই সংস্থাকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ইনসেনটিভ দেওয়া হবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর আরও একটি বড় চমক দিলেন কমলনাথ।

শপথগ্রহণের পর সাংবাদিক বৈঠকে মধ্যপ্রদেশের নতুন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের জন্য শিল্পপতিদের কাছে আমরা শর্ত লাগু করেছি। শুধুমাত্র যেসব শিল্পসংস্থা স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের উপর জোর দেবে তারাই ইনসেনটিভ পাবে। তাদের মোট কর্মীদের মধ্যে ৭০ শতাংশকে মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা হতে হবে। তবেই শিল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ইনসেনটিভ পাওয়া যাবে। বিহার ও উত্তরপ্রদেশ থেকে লোক এখানে আসে। তার জেরে স্থানীয় মানুষ চাকরি পান না।" পাশাপাশি, গতকাল রাজ্যে চারটি গারমেন্ট পার্ক সূচনার কথাও ঘোষণা করেন কমলনাথ।

গতকালই শপথ নেওয়ার মাত্র ২ ঘণ্টার মধ্যে কৃষিঋণ মকুবের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন মধ্যপ্রদেশের নতুন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, "বিধানসভা ভোটের ইস্তাহারে আমরা বলেছিলাম, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত কৃষিঋণ মকুব করা হবে। কংগ্রেসের প্রতিশ্রুতি রাখার জন্য মুখ্যমন্ত্রিত্বের দায়িত্বভার গ্রহণের পর সর্বপ্রথম কৃষিঋণ মকুবের ফাইলে সই করেছি।" চলতি বছর বিধানসভা নির্বাচনে প্রচারের সময় মধ্যপ্রদেশের মান্দাসৌরে রাহুল গান্ধি প্রতিশ্রুতি দেন, "কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে ১০ দিনের মধ্যে কৃষিঋণ মকুব করা হবে।" গত কয়েকবছর ধরে কৃষক আন্দোলনের উৎসস্থলে পরিণত হয়েছে মান্দাসৌর। ফলে এই ঘোষণার তাৎপর্য আরও বেড়ে যায়। 

গতকাল মধ্যপ্রদেশের নতুন সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করে, চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত যোগ্যতাসম্পন্ন কৃষকরা রাষ্ট্রায়ত্ত ও কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত স্বল্পকালীন যে ঋণ নিয়েছেন, তা মকুব করে দেওয়া হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজ্যের প্রায় ৩৪ লাখ কৃষকের ঘাড় থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকার ঋণের বোঝা নামবে। তার ফলে সরকারি কোশাগার থেকে খরচ হবে প্রায় ৩৫ থেকে ৩৮ হাজার কোটি টাকা। আর এখানেই অর্থনীতিবিদদের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে মধ্যপ্রদেশের নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে। তাঁদের দাবি, সরকারি নথি অনুযায়ী মধ্যপ্রদেশ ইতিমধ্যে ১.৬ লাখ কোটি টাকা ঋণের ভারে ন্যুব্জ। তারপর জনমোহিনী নীতির ফলে টান পড়বে সরকারি কোশাগারে। ব্যাহত হবে রাজ্যের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম। 

এই প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদদের একহাত নেন কমলনাথ। তিনি বলেন, "যখন ব্যাঙ্কগুলি বড় শিল্পপতিদের ৪০-৫০ শতাংশ ঋণ মকুব করে দেয়, তখন কোনও অর্থনীতিবিদ তো প্রশ্ন তোলেন না। কিন্তু, যখন কৃষিঋণ মকুব করা হচ্ছে, তাঁরা ব্যথায় কেঁদে ওঠেন। রাজস্ব ক্ষতি নিয়ে তাঁরা লেকচার দেন। কিন্ত, আমার মতে তাঁরা কৃষক, কৃষি, গ্রামের বিষয়ে কিছু জানেন না। ব্যাঙ্কগুলিকে এই বিষয়গুলি অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে।" পাশাপাশি, তিনি বলেন, "কন্যাদান যোজনার আওতাভুক্ত যুবতিদের ক্ষেত্রে সরকারি সাহায্য ২৮ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫১ হাজার করা হবে।"