অনলাইনে ব্যাঙ্ক প্রতারণা, ঝাড়খণ্ড পুলিশকে চিঠি দিল লালবাজার


কলকাতা : জামতারা, দুমকা এবং রাঁচি। ব্যাঙ্ক প্রতারণায় যেন ভারতীয় রোমানিয়া বা নাইজেরিয়া। একসময় অনলাইন প্রতারণায় বিশ্ববাসীর কাছে ত্রাস হয়ে উঠেছিল নাইজেরিয়ান প্রতারকরা। কয়েকমাস আগেই রোমানিয়দের 'হাতযশের' সাক্ষী থেকেছে কলকাতা। তবে এখন কলকাতা পুলিশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে ঝাড়খণ্ড। লালবাজার সূত্রে খবর, অনলাইনে ব্যাঙ্ক প্রতারণার বেশ কয়েকটি মামলায় যোগসূত্র রয়েছে ঝাড়খণ্ডের তিন জেলার। আর তাই কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে ওই তিন জেলার পুলিশ সুপারকে পাঠানো হয়েছে চিঠি। সঙ্গে দেওয়া হয়েছে বিস্তারিত তথ্য।

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৬ সেপ্টেম্বর গার্ডেনরিচ থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। অভিযোগে বলা হয়, অভিষেক রাউত নামে একাদশ শ্রেণীর এক ছাত্রের অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে গেছে ৮০ হাজার টাকা। এই প্রতারণার ধরনে খুব একটা নতুনত্ব ছিল না। ব্যাঙ্কের লোক সেজে ফোন করে ATM-এর তথ্য জেনে নেওয়া হয়। কিন্তু মামলার তদন্তে নেমে দেখা যায়, মোডাস অপারেন্ডিতে লাগানো হয়েছে প্রখর বুদ্ধি। পাকা জালিয়াত ছাড়া এভাবে গুটি সাজানো যেত না। ওই ছাত্রের টাকা ঢুকেছে ক্যানিং এবং সোনারপুর এলাকার দুই মহিলার paytm অ্যাকাউন্টে। তারপর সেই টাকা চলে গেছে জামতারার এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে। এখানেই শেষ নয়। দেখা যায় সেই টাকা তোলা হয়েছে দুমকার একটি ATM থেকে। ব্যাঙ্ক থেকে তথ্য নিয়ে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশ। তবে তদন্তকারীরা তখনও বোঝেননি চমকের আরও বাকি ছিল। এরপর ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নামে এক ব্যক্তি তাকে খুলে দিয়েছে অ্যাকাউন্ট। অ্যাকাউন্টে লেনদেন জরুরী, এমন কথা বলে তার কাছ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ATM কার্ড। অবশেষে পুলিশ খোঁজ পায় সুশান্ত সোরেন নামে ওই পাকা জালিয়াতের। সুশান্ত দুমকার বাসিন্দা। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। 
জানা যায়, সোনারপুর এবং ক্যানিংয়ের যে দুই মহিলার paytm-এ টাকা প্রথমে ঢুকেছিল তারা এসবের বিন্দুবিসর্গ জানেন না। তাদের দু'শো টাকা দিয়ে টিপ ছাপের মাধ্যমে করানো হয়েছে paytm-এর KYC(নো ইয়র কাসটোমার)। এরকম বেশ কয়েকটি মামলার তদন্ত করে কলকাতা পুলিশ। তারপর দেখা যায়, ব্যাঙ্কের নামে ফোন করে ATM কার্ড ব্লক হওয়ার যত ফোন আসছে, তার প্রায় সবটাই ঝাড়খণ্ড থেকে। আর সেকারণে লালবাজারের তরফে দেওয়া হয়েছে চিঠি। যাতে ওই জালিয়াতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সক্রিয় হয় ঝারখন্ড পুলিশ। অন্যদিকে চিঠি পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান প্রভীন কুমার ত্রিপাঠি।