রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নয়া গভর্নর হলেন শক্তিকান্ত দাস


রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নয়া গভর্নর হলেন শক্তিকান্ত দাস। নোটবন্দির পরে দেশে যে 'অর্থনৈতিক অরাজকতা' শুরু হয়েছিল, তা সামাল দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন শক্তিকান্ত দাস। সে সময় আর্থিক বিষয়ে সচিব পদে আসীন ছিলেন তিনি। উল্লেখ্য, গতকাল রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের পদ থেকে আচমকা ইস্তফা দেন উর্জিত প্যাটেল। এরপরই জল্পনা শুরু হয় ওই পদে কে এবার বসতে চলেছেন?

২০১৬ সালে ৮ নভেম্বর নরেন্দ্র মোদী নোটবন্দির ঘোষণা করার পরই, সে সময় আর্থিক বিষয়ক সচিব শক্তিকান্ত দাসকে পাশে বসিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর বলেছিলেন, বাজারে নগদের অভাব হবে না। তবে, হাল্কা উল্টো সুর শোনা যায় শক্তিকান্ত দাসের গলায়। নোটবন্দির জেরে দু'সপ্তাহ আমজনতাকে ভুগতে হবে বলে অকপটে স্বীকার করে নেন তিনি। পরবর্তীকালে নোটবন্দি নিয়ে নানা ইস্যুর মোকাবিলা করতে সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা গিয়েছে ১৯৮০ ব্যাচের এই আইএএস অফিসারকে। এর আগে পঞ্চদশ অর্থকমিশনের সদস্যও ছিলেন তিনি।

উল্লেখ্য, কেন্দ্র এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের টানাপোড়েনের জেরে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই গভর্নরের পদ থেকে ইস্তফা দেন উর্জিত প্যাটেল। 'ব্যক্তিগত কারণ' দেখিয়ে পদত্যাগ করলেও, অনেকে মনে করছেন তাঁর সঙ্গে মোদী সরকারের দ্বৈরথ প্রকাশ্যে চলে আসায় তাঁর এই সিদ্ধান্ত। কেন্দ্রের স্পষ্ট বার্তা, দেশের অর্থনীতিতে নগদের ঘাটতি মেটাতে কোষাগারে থাকা টাকা দিয়ে সাহায্য করুক রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। নগদহীনতায় ভুগছে ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি। লোকসভা নির্বাচনের মুখে অর্থনীতি চাঙ্গা করতে মরিয়া কেন্দ্র। উর্জিত প্যাটেল কেন্দ্রের আর্জিতে সাড়া না দেওয়ায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আইনের ৭ নম্বর ধারা প্রয়োগ করে 'পরামর্শ' দেওয়ার পথে যায় মোদী সরকার। কেন্দ্রের এমন নজিরবিহীন সিদ্ধান্তে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয় বিভিন্ন মহলে। পাশপাশি অনাদায়ী ঋণে জর্জরিত ১১টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ঋণনীতি শিথিল করায় দাবি জানায় কেন্দ্র। সেক্ষেত্রও বেঁকে বসেন উর্জিত প্যাটেল।

গত নভেম্বরে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পরিচালন কমিটির বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে রফাসূত্র বের হলেও আর বেশি দূর এগোয়নি উর্জিত প্যাটেল। প্রাক্তন গভর্নর যেখানে লড়াইটা শেষ করেছিলেন তাঁর উত্তরসূরী কি সেখান থেকেই শুরু করবেন? না-কি কেন্দ্রের দেখানো পথেই চলবেন? এ নিয়ে ইতিমধ্যে তুমুল জল্পনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। একসময় উর্জিত প্যাটেলকে নরেন্দ্র মোদীর 'ইয়েস ম্যান' বলে মনে করা হত। আমলা শিবিরে শক্তিকান্ত দাসও মোদীর 'ঘনিষ্ঠ' বলে পরিচিত। দেশের আর্থিক উন্নয়নে কোন পথে 'শক্তিপ্রদর্শন' করবেন নয়া গভর্নর, এখন এটাই দেখার।