"গোরু, ছাগলও খাবে না মিড-ডে মিল", স্কুল পরিদর্শন করে মন্তব্য পঞ্চায়েত সভাপতির


মালদা : পড়ুয়ারা পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার পাচ্ছে না। একাধিকবার এই অভিযোগ উঠেছে সরকারি স্কুলগুলির বিরুদ্ধে। মালদার একাধিক স্কুলে অভিযান চালিয়ে এই ছবিই দেখতে পেয়েছেন তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি টিঙ্কু রহমান বিশ্বাস ও পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ আবদুল মজিদ।

টিংকু রহমান জানান, গতকাল এলাকার কয়েকটি স্কুলের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, "অনেক স্কুলেই মিড-ডে মিলের খাবার অত্যন্ত নিম্নমানের। যেমন খানপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড-ডে মিলে পড়ুয়াদের যে খাবার দেওয়া হচ্ছে তা খাওয়ার অযোগ্য। ওই খাবার গোরু-ছাগলও খাবে না। তাঁরা সেটা নিজেরাই দেখেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্রতিটি স্কুলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন খাবার দেওয়ার কথা। সরকার স্কুলগুলিতে পুষ্টিকর খাবার দিচ্ছে। কিন্তু, সেটা এখানে মানা হচ্ছে না। প্রতিটি স্কুলে পড়ুয়াদের মিড-ডে মিলের খাবার দেওয়ার কথা বলে এসেছি।"

স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে তাঁরা স্কুলগুলির কর্তৃপক্ষকে বলে এসেছেন, মিড-ডে মিলের খাবার উন্নতমানের না হলে নির্দিষ্ট জায়গায় কড়া অভিযোগ জানাতে বাধ্য হবেন। কাল তাঁরা মেঘুটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মিড-ডে মিলের জন্য রাখা পোকা ধরা চালের নমুনাও সংগ্রহ করে নিয়ে এসেছেন। মেঘুটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাঁরা অভিযোগ পেয়েছেন, ওই স্কুলে প্রধান শিক্ষক নিয়মিত স্কুলে আসেন না। এলেও নিজের ইচ্ছামতো চলে যান। ওই স্কুলের পড়ুয়ারা তাঁর কাছে অভিযোগ করেছে, স্কুলে কখনও জাতীয় সংগীত গাওয়া হয় না। জাতীয় সংগীত কী, সেটাই তারা জানে না। টিংকু বাবুর কথায়, এখন স্কুলেও চলছে দালালরাজ। তাঁরা এটা কিছুতেই চলতে দেবেন না।

গতকাল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ লক্ষ্মীপুর মিছুটোলা নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়, উত্তর লক্ষ্মীপুর মিছুটোলা বালিকা উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়, খানপুর ম্যানেজড প্রাথমিক বিদ্যালয়, বৈজু ঘোষটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মেঘুটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। মেঘুটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক পড়ুয়ার মা রুকসানা বিবি অভিযোগ করেন, "স্কুলে মিড-ডে মিল প্রতিদিন দেওয়া হয় না। রান্না করা ভাতে থাকে অসংখ্য পোকা। রান্নাটাও ঠিকমতো হয় না। স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিয়মিত স্কুলে আসেন না। পঠনপাঠনের অবস্থা যত কম বলা যায়, ততই ভালো।" খানপুর ম্যানেজড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে এক নিজামুদ্দিন শেখ নামে এক গ্রামবাসীর বক্তব্য, পোকা ধরা মিড-ডে মিলের বিষয়ে তাঁরা অনেকবার স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁদের কথায় কোনও কান দেয় না। মেঘুটোলা স্কুলের পড়ুয়াদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন আগে তারা মাত্র একদিন মিড-ডে মিলে ডিম পেয়েছিল। তারপর থেকে আর কোনওদিন ডিম জোটেনি। এখন শুধু ভাত, সয়াবিনের সবজি আর আলু জোটে। 

এবিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সভাপতি আশিস কুণ্ডুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে বিষয়টি জেনেছেন। খোঁজখবর নেবেন।