হাড় কাঁপিয়ে দেবে নতুন বছরের প্রথম চার দিন


কলকাতা: 'শীতের হাওয়ায় লাগল নাচন' কবিগুরুর বিখ্যাত গানের লাইন। মৌসম ভবনের তথ্য বলছে শুধু আমলকী ডাল নয় পশ্চিমবঙ্গের মানুষের হাড় কাঁপিয়ে দেবে নতুন বছরের প্রথম চার দিন। হাওয়া অফিস এই বছর প্রথম থেকেই কড়া শীতের পূর্বাভাস দিচ্ছে। বর্ষবরণের রাতেও জমিয়ে ঠাণ্ডা পড়তে পারে বলে জানিয়েছিল হাওয়া অফিস। এবার প্রথম চারদিনের পূর্বাভাসে মিলছে হাড় কাঁপানো শীতের ইঙ্গিত।
 
শীত কাতুরে বাঙালি অভিযোগের শেষ নেই। শীত কম হলে নেই নেই অভিযোগ। বেশি হলে আবার কমিয়ে দেওয়ার আর্জি অভিযোগ। সবসময় সবকিছুই যে তুল্যমূল্য ভাবেই হবে না এটা বাঙালি মন মানতে পারে না। হাতেগোনা কিছু বাঙালি অবশ্য কড়া শীতকেই বেশি পছন্দ করেন। এবার তেমন কিছুরই আভাস দিচ্ছে মৌসম ভবন।

পয়লা থেকে ৪ জানুয়ারি ২০১৯ পর্যন্ত তীব্র শীত অনুভূত হবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতে। এই বছরের সবই উল্টো। বর্ষা এসেছিল দক্ষিণবঙ্গ দিয়ে। এবার শীতেও যেন তারই প্রভাব। পূর্বাভাস অনুযায়ী উত্তরবঙ্গের ঠাণ্ডাকে হারাতে প্রস্তুত নতুন বছরে এই মরসুমের শীত। এমনিতেই গত সপ্তাহ দুয়েক ধরে শীতের পারদ পতনে উত্তর এবং দক্ষিণের কাঁটায় কাঁটায় টক্কর চলছে। এবার উত্তরকে হারিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত।

গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি বিহার, উত্তর ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড এবং ওডিশার ভিতরের দিকে ব্যাপক শীতের সম্ভাবনা থাকছে। কিন্তু এর কারণ কি ? মৌসম ভবন জানাচ্ছে পূর্ব হিমালয়ের উপর পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জেরে এক থেকে তিন জানুয়ারি ব্যাপক বরফ পাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর জেরে সিকিমেও বরফ পড়ার সম্ভাবনা থাকছে। সিকিমের ওই হাওয়াই কাঁপিয়ে দিতে পারে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গকে। পাশাপাশি ডিসেম্বর শেষে সাগরও শান্ত। ফলত উত্তুরে হাওয়ায় বাধা নেই। ফল, কড়া শীত।

কলকাতায় ডিসেম্বরের ঠাণ্ডা গত পাঁচ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত পারদ নেমেছে ১১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে তিন ডিগ্রি কম। গত ২৪ ঘণ্টায় বর্ধমানের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাঁকুড়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ক্যানিং ৯.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কৃষ্ণনগরের তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ১০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

পানাগড়ে তাপমাত্রা নেমেছে ৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। পুরুলিয়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শ্রীনিকেতন এবং হাওড়ার উলুবেড়িয়া ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ৭.৮ ও ১০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বহরমপুর এবং ব্যরাকপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে ৭.২ এবং ৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।