মেলবোর্নে ঐতিহাসিক টেস্ট জয়, অপমানের প্রতিশোধ নিলেন বিরাট কোহলি


প্যাট কামিন্সের নাম অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য প্রস্তাব করেছিলেন সে দেশের এক মহিলা ক্রিকেট তারকা মেগান স্কাট। তাঁর যুক্তি ছিল, একা প্যাটই সব কাজ সামলে দিচ্ছে। ব্যাট, বল, ফিল্ডিং সবেতেই ছেয়ে রয়েছেন তিনি। এমন দশাবতার দায়ত্বি নিলে দেশের হাল শুধরে যাবে। প্যাট কামিন্সের প্রধানমন্ত্রী হওয়া প্রায় পাকা হয়ে যেত। যদি কঠিন অ্যাসাইনমেন্ট তিনি উতরে দিতেন। নাথান লিঁয়কে তিনি বেছে নিয়েছিলেন নিজের ডেপুটি হিসাবে। তার পর কয়েক ঘণ্টা ধরে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালালেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হওয়ার রাস্তাটা বোধ হয় এতটাই কঠিন। তাই মাঝপথে পা পিছলে গেল অজি পেসারের। এই জায়গা থেকে তাঁর প্রাপ্তি শুধু নামের পাশে অলরাউন্ডার তকমা যোগ করে ফেলা। ব্যস, ওইটুকুই। মেলবোর্ন টেস্টের বাকি পাওনাটুকু সুদে-আসলে গুনে গুনে বুঝে নিল বিরাট কোহলি অ্যান্ড কোং।

বৃষ্টি সকালের দিকে ক্রিকেট ঈশ্বরের বরদান হয়ে এসেছিল। কিন্তু মেলবোর্নের অশুচি বাতাবরণে অজিদের সঙ্গ দিল না বেশিক্ষণ। এই হার খণ্ডাবে কে! ক্রিকেটের আচার-উপাচার মেনে যা হওয়ার তাই হল। অস্ট্রেলিয়ার হার। ভারতের নৈতিক জয়। মেলবোর্নের বাতাস বিষিয়ে তুলেছিল অজিরা। মাঠে ক্রিকেটাররা, মাঠের বাইরে দর্শকরা। চারপাশ থেকে কেবল বিষবাষ্প ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল বিরাট, ঋষভ, রোহিতদের উপর। ভারতীয় দলের নীতি এখন খুব সোজা-সাপটা। ঢিল মারলে পাটকেলটি খেয়ে ফিরতে হবে। ক্রিকেটীয় স্লেজিং চলছিই। ভারতীয়রা সেটা করছিলেন একটা নির্দিষ্ট মার্জিন বজায় রেখে। কিন্তু অজিরা ভদ্রতার ধার ধারেনি। কদর্য ভাষায় আক্রান্ত করতে চেয়েছে ভারতীয় অধিনায়ককে। মাঠে আগ্রাসী হিসাবে কুখ্যাত বিরাট কোহলিও নিজের সম্মানহানি হতে দেননি। শালীনতার মাত্রা রেখে নিজেকে সংযত করেছেন। অজিদের মতো নিজেকে অসভ্যতার সর্বনিম্ন স্তরে নামিয়ে আনেননি। নীতি, আদর্শ মেনে চলার ফল পেলেন হাতে-নাতে। ১৩৭ রানে মেলবোর্ন টেস্ট জয়। সঙ্গে টেস্ট সিরিজে ২-১ এগিয়ে যাওয়া। বলতে পারেন, এতক্ষণে বর্ডার-গাভাসকর ট্রফির দিকে ডান হাতের তর্জনি উঁচিয়ে বিরাট বলতে শুরু করেছেন, ''ওটা আমার চাই।''

শেষবেলায় ভারতের জয়ের মাঝে পাঁচিল তুলেছিলেন নাথান লিঁয় ও প্যাট কামিন্স। লিঁয় ৫০ বল খেলে সাত রান করলেন। কামিন্সকে ৬৩ রানে প্যাভিলিয়নের রাস্তা দেখিয়ে দিলেন বুমরা। জাদেজা, বুমরা দ্বিতীয় ইনিংসে তিন উইকেট করে পেলেন। সামি, ইশান্তের ঝুলিতেও দুটি করে উইকেট। অজিদের সঙ্গে আবার দেখা হবে সিডনিতে।