গবেষণার স্বপ্ন গরাদেই আটকে গেল! জেলেই অনশনে মাওবাদী নেতা অর্ণব

অর্ণব দাম।

মাওবাদীদের মূলস্রোতে ফেরানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রাজ্য সরকার। সুচিত্রা মাহাতো, রঞ্জিত পালদের মতো অনেক মাওবাদী নেতাই রাজ্য সরকারের প্রস্তাবে সাড়া দিয়েআত্মসমর্পণ করেছেন। অনেকে আবার জেলে থেকেও সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টা করছেন। তাঁদেরই একজন মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম ওরফে বিক্রম।

পশ্চিম মেদিনীপুরের শিলদায় ইএফআর ক্যাম্পে হামলা চালানোর ঘটনায় অর্ণবই ছিলেন মূল অভিযুক্ত। পরে বন্দুক, গুলির লড়াই ছেড়ে গবেষণা করতে চেয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার ছিল ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট (নেট)। এক সপ্তাহ আগেই অর্ণব কারা কর্তৃপক্ষকে সব নথিপত্র দিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতেই পারলেন না তিনি। এ জন্য তিনি প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন। পাশাপাশি অনশনও শুরু করেছেন ওই মাওবাদী নেতা।যতদিন না পর্যন্ত তাঁর পড়াশোনা বা নেট পরীক্ষা দেওয়ার পাকা ব্যবস্থা না করা হচ্ছে, ততদিন অনশন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অর্ণব। ইতিমধ্যেই তিনি এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দিয়েছেন। সংশোধনাগার সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।

গরাদের ভিতরে থেকেই অর্ণব প্রথম শ্রেণিতে ইতিহাসে স্নাতক হন। হাল ছেড়ে দেননি। স্নাতকোত্তরেও ৬৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে প্রথম শ্রেণিতে পাশ করেন তিনি। এর পরেই 'নেট'দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেন। স্নাতক, স্নাতকোত্তরের মতোই নেট-এ বসার সব ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন কারা কর্তৃপক্ষই।

তাহলে কেন তিনি পরীক্ষায় বসতে পারলেন না? এর নেপথ্যে কি অন্য কোনও কারণ রয়েছে? প্রশ্ন তুলছে মানবাধিকার সংগঠনএপিডিআর। ওই সংগঠনের তরফে রঞ্জিত শূরের অভিযোগ, "পরিকাঠামো  ছাড়া সংশোধনাগারের থেকে পরীক্ষায় ভাল ফল করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়। অর্ণবের মুক্তি নিয়ে একটা জনমত গড়ে উঠছিল। হয়তো সরকার ভয় পেয়েছে, নেট পরীক্ষাতেও ভাল ফল করলে, জনমত আরও প্রবল হবে।"

কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা বা গবেষণার জন্যে সর্বভারতীয় স্তরে নেট পরীক্ষা পাশ করতে হয়। ওই মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, সংশোধনাগার এবং অপরাধমনস্কতা নিয়েই গবেষণা করতে চান অর্ণব।