‌গত পাঁচ বছরে দেশের সমস্যা দূর করতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী, কটাক্ষ রাহুলের


'‌কৃষকদের দুরবস্থা, বেকারত্ব এবং দুর্নীতি–এই তিনটি বিষয়ের উপর ভর দিয়েই ২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু তিনি দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ। গত পাঁচ বছরে দেশের সমস্যা দূর করতে পারেননি মোদিজি।' মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে একথা যখন বলছেন রাহুল গান্ধী, তখন তাঁর চোখে–মুখে ফুটে উঠছে আত্মবিশ্বাসের ঝলক। মুখে হাসি। আর হবে নাই বা কেন?‌ যে বিজেপি কংগ্রেস মুক্ত ভারত গড়ার ডাক দিয়েছিল, আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে তাঁরাই যেন কর্পূরের মতো উবে গেল। নাহলে ক্ষমতাসীন সরকারের এরকম খারাপ ফল হবে বা কেন!‌ এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আগাগোড়া প্রধানমন্ত্রী বাক্যবাণে বিদ্ধ করে গেলেন রাহুল। তবে এর পাশাপাশি শুরুতেই অবশ্য কংগ্রেসকর্মী থেকে সাধারণ মানুষ প্রত্যেককে অভিনন্দনও জানান। রাহুল বলেন, '‌সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে কংগ্রেস কর্মী–সবাইকে অনেক অভিনন্দন। যেখানে যেখানে হেরেছি, সেখানে যারা জিতেছে তাঁদেরও অভিনন্দন জানাচ্ছি। এই জয় কংগ্রেস কর্মী থেকে শুরু করে দেশের যুবক, কৃষক এবং ছোট ব্যবসায়ীদের। যে আওয়াজ এখন উঠেছে, সেটা আমাদের শুনতে হবে। এখন পরিবর্তনের সময়। সেটাকেই এগিয়ে নিয়ে যাব আমরা। মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, রাজস্থানে অনেক কাজ করার আছে। মধ্যপ্রদেশে সরকার গড়লেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কৃষিঋণ মকুব করা হবে। তিন রাজ্যের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ। আমরা তিন রাজ্যেই উন্নয়নের চেষ্টা করব।'‌ এরপরই তিনি প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী চাকরির যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা রাখতে পারেননি। আপনারা যা করছেন, তাতে দেশের মানুষ খুশি নয়। ভোটের এই ফলাফলে আশা করি সেই বার্তাই পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী এবং বিজেপি। মোদিজি কখনই মানুষের চাহিদা বুঝতে পারেননি। বেকারত্ব এবং কৃষকদের সমস্যা শুধু মধ্যপ্রদেশের ব্যাপার নয়, গোটা দেশের কাছে সমস্যা। মোদির আমলে দেশ ভাল নেই। বিরোধীরা একজোট হয়েছেন, একসঙ্গেই সবাই লড়াই করবেন। যে কাজের জন্য মোদিকে নির্বাচন করেছিল দেশবাসী, সেই কাজ হয়নি। মোদি আসলে দুর্নীতিগ্রস্ত। রাফাল কাণ্ডেও দুর্নীতি হয়েছে এবং তা সবার সামনে আসবেই। আসলে গত ‌৫ বছরে কোনও কাজই করেননি প্রধানমন্ত্রী।'‌ ভোটের ফল তাঁর দলের পক্ষে গেলেও এখনও ইভিএম মেশিনে ভোটের বিপক্ষে রাহুল। জানান, '‌ইভিএম নিয়ে অভিযোগ বিশ্বজুড়ে ‌রয়েছে। আমাদের গোটা দেশে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হয়। ইভিএম–এর মধ্যে এমন একটি চিপ আছে যার মাধ্যমে গোটা নির্বাচনী প্রক্রিয়াটিকেই প্রভাবিত করা যায়। তাই তো আমেরিকার মতো দেশও ইভিএম মেশিনে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে ব্যালট বাক্সে ভোটগ্রহণ ব্যবস্থা চালু রেখেছে।'‌

হল না কংগ্রেস মুক্ত ভারত। বরং লাগাতার আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলল সেই কংগ্রেস। আর মুখ থুবড়ে পড়ল বিজেপি। কাজ করল না মোদি–শাহ জুটির কেমিস্ট্রি। মঙ্গলবার শুরুতেই ছত্তিশগড়, রাজস্থান, তেলঙ্গানা প্রথমেই হাতছাড়া হয়ে যায় বিজেপির। মধ্যপ্রদেশেও লড়াই হাড্ডাহাড্ডি।