জমি নিয়ে বিবাদের জেরেই পড়শির নাম সেক্স সাইটে, যাদবপুরে গ্রেফতার মহিলা


দক্ষিণ কলকাতায় দুই মহিলার নামে এসকর্ট সার্ভিসের ওয়েবসাইটে ভুয়ো প্রোফাইল খুলে দেওয়ার ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম থানা। ধৃতের নাম নাজিয়া রহমান। যাঁদের নামে ভুয়ো প্রোফাইল খোলা হয়েছিল, অভিযুক্ত মহিলা তাঁদের পড়শি। জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরেই দুই প্রতিবেশীর নামে সেক্স সাইটে ফেক প্রোফাইল খুলে তাঁদের বিপদে ফেলার চেষ্টা করেছিল নাজিয়া। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ।

বুধবার লালবাজারে দীর্ঘক্ষণ জেরা করা হয় মূল অভিযুক্ত নাজিয়া রহমানকে। তার পরই তাঁকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম থানা।

'গোপনে বন্ধুত্ব পাতানো'র জন্য অনলাইনে দক্ষিণ কলকাতার এক মহিলার ছবি দিয়ে একটি ভুয়ো প্রোফাইল খোলা হয়। বন্ধুত্ব পাতানোর হাতছানি থাকলেও ওই ওয়েবসাইটগুলোর আড়ালে আদতে 'এসকর্ট সার্ভিস' চালানো হত বলে অভিযোগ। এর পর থেকেই ওই মহিলার আবাসনের ফ্ল্যাটে হাজির হতে থাকে লোকজনেরা। গত মাস দুয়েক ধরেই এ রকম ঘটছিল। অভিযোগ, ওই গৃহবধূর অজান্তেই অনলাইনে বন্ধুত্ব পাতানোর ওয়েবসাইটে তাঁর নাম নথিভূক্ত করা হয়েছে। একই ভাবে ওই মহিলার দেওরের স্ত্রীর নাম-ছবিও ওয়েবসাইটে আপলোড করে দেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্য 'কাস্টমার'-দের জন্য তাতে ওই ফ্ল্যাটের নাম-ঠিকানা সম্পর্কিত সব তথ্য দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি, সে সমস্ত তথ্যই নিজেদের মোবাইল চ্যাটে পেয়ে যাচ্ছেন 'কাস্টমার'-রা।

ওই গৃহবধূর নাম-ছবি ব্যবহার করে ওয়েবসাইটে লেখা হয়েছে, "আমি...। কিছু দিন আগে আমার বিয়ে হয়েছে। স্বামীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে আমিখুশি নই। স্বামীর চাকরিও নেই। আমি একা, টাকারও দরকার। আমার বয়স মাত্র ২০ বছর। বাড়িতে এলে ২ ঘণ্টার জন্য মাত্র ৫০০ টাকা লাগবে। গ্রুপ সার্ভিসও পাওয়া যায়।" এর পর থেকেই নিজের ফ্ল্যাটের দরজায় দিনেদুপুরে 'কাস্টমার'-দের ভিড় শুরু হয়। তাতে রীতিমতো আতঙ্কিত ওই মহিলা এবং তাঁর পরিবার। ফ্ল্যাটের সামনে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়েও তা রোখা যায়নি। এ নিয়ে কলকাতা পুলিশের অভিযোগ দায়ের করেওই মহিলার পরিবার। এর পর সেই কেস হাতে নেয় সাইবার ক্রাইম শাখা।

এর আগে এই ঘটনায় উত্তর কলকাতার হরিরাম গোয়েন্‌কা স্ট্রিট থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল আরেক অভিযুক্ত গৌরব বর্মাকে। তাকে জেরা করেই পুলিশের সন্দেহ হয়, গোটা ঘটনার মূল চক্রী গৌরব নয়, বরং ওই আবাসনের কোনও এক প্রতিবেশী মহিলা। ধৃত নাজিয়া রহমানই 'এসকর্ট সার্ভিসে'র ওয়েবসাইটে ওই গৃহবধূ ও তাঁর দেওরের স্ত্রীর নাম-ছবি দিয়ে ভুয়ো প্রোফাইল খুলতে গৌরবের সাহায্য নিয়েছিলেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।