৬ হাজার থেকে ২০ লক্ষ, কোথা থেকে টাকা পড়ছে অ্যাকাউন্টে! ভ্যাবাচ্যাকা খাচ্ছে হাওড়ার গ্রাম


কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে ৬ হাজার টাকা, কারও ২০ হাজার! ৮০ হাজার টাকাও আছে!

আচমকা অর্থপ্রাপ্তিতে থ হাওড়ার জয়পুরের ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান এবং কাশমলি—দুই পঞ্চায়েত এলাকার বহু মানুষ। শুক্রবার দুপুর থেকে তাঁদের মোবাইলে ওই অর্থপ্রাপ্তির বার্তা আসা শুরু হয়। শনিবারেও অব্যাহত ছিল। অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করেই চমকে যান গ্রাহকেরা।

কোন খাত থেকে অত টাকা এল? উত্তর দিতে পারেননি গ্রাহকেরা। অন্ধকারে জেলা প্রশাসনও। হাওড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) শঙ্করপ্রসাদ পাল বলেন, ''খবরটা জানি। কোন খাতের টাকা, তা নিয়ে জেলার ল‌িড ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলব। সোমবার থেকে তদন্ত শুরু হবে।''

ঠিক কতজনের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে, তা-ও নিশ্চিত জানা যায়নি। তবে, দুই পঞ্চায়েত এলাকায় দু'টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অনেক গ্রাহকই টাকা পেয়েছেন। ধর্মঘটের কারণে শুক্রবার থেকে ব্যাঙ্ক বন্ধ। ফলে, দুই ব্যাঙ্কের বক্তব্য জানা যায়নি। যোগাযোগ করা যায়নি জেলা লিড ব্যাঙ্কের কর্তাদের সঙ্গেও। ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় গ্রাহকেরা চলে যান গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে। সেখানে অ্যাকাউন্ট পরীক্ষার পরে অর্থপ্রাপ্তির কথা জানতে পেরে অনেক গ্রাহক কিছু কিছু টাকাও (ওই কেন্দ্রে বেশি টাকা থাকে না) তোলেন। ওই দুই পঞ্চায়েত এলাকায় কোনও এটিএম নেই। গ্রাহকেরা এখন সোমবার ব্যাঙ্ক খোলার অপেক্ষায় রয়েছেন।

ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান পঞ্চায়েতের ভৌমিক পাড়ার বহু জনের অ্যাকাউন্টে ২০ লক্ষ টাকা জমা পড়ার বার্তা এসেছে বলে দাবি করেন পঞ্চায়েত প্রধান সাবিনা মল্লিকের স্বামী বাপি মল্লিক। ঘোড়াবেড়িয়া গ্রামের মধু মল্লিকের বোন রুকসানার অ্যাকাউন্ট আছে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বাকসিহাট শাখায়। রুকসানার অ্যাকাউন্টে ২৭ হাজার টাকা জমা পড়ার খবর আসে এ দিন দুপুরে। পেশায় দিনমজুর মধু বলেন, ''বোন ৭ বছর আগে অ্যাকাউন্ট খুলেছে। লেনদেনও সে ভাবে করেনি। অথচ ওর অ্যাকাউন্টে ২৭ হাজার টাকা জমা পড়েছে!'' ওই পঞ্চায়েতেরই হারুন রশিদ বলেন, ''কেউ টাকা পাচ্ছেন, কেউ নিরাশ হচ্ছেন। অবিলম্বে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ করা উচিত।''

এই অর্থপ্রাপ্তির কথা ছড়াতেই দুই পঞ্চায়েত এ‌লাকার মানুষ 'পাসবই' হাতে গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রগুলিতে ভিড় জমাতে থাকেন। ভাটোরা-শিবতলা বাজারের বিভিন্ন সাইবার কাফেতেও অনলাইনে অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করার ভিড় হয়। জেলা প্রশাসন প্রথমে মনে করেছিল, গত বছরের বন্যায় যে সব চাষির ফসল নষ্ট হয়, তাঁদের বিমার টাকা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু পরে প্রশাসনের ভুল ভাঙে। অনেক কলেজ ছাত্র এবং দিনমজুরের অ্যাকাউন্টেও টাকা ঢুকেছে।